আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে টিকে থাকতে হলে মাস্ক পরতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলায় শুরু থেকেই স্বাস্থ্যখাত দেশের মানুষের জন্য চিকিৎসাসেবা ফ্রি করে দিয়েছে। এতে করে পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, কোভিড মোকাবিলায় প্রতিটি আইসিইউ বেডের রোগীর পেছনে সরকারের গড়ে প্রায় চার লাখ টাকা ও সাধারণ বেডের রোগীর জন্য এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।’
শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হেলথ ইকনোমিক ইউনিট কর্তৃক আয়োজিত সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দিবস-২০২০ উপলক্ষে সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কোভিড মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যথোপযুক্ত নেতৃত্ব ও হাজারো স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই দেশের কোভিড এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জাহিদ মালেক জানান।
আরও পড়ুন:বেসরকারি হাসপাতালে সেবার মূল্য ঠিক করে দেবে সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘সময় মতো জরুরি ও প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুত রাখা হয়েছে। সঠিক সময়ে ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। দ্রুততার সাথে কোভিড টেস্ট সেন্টার ১টি থেকে ১২০টি করা হয়েছে। মাত্র অল্পদিনেই দেশের ৫৯টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে দেশের আড়াই কোটি মানুষের ফোনকল রিসিভ করে সরকারি সেবা দেয়া হয়েছে। এর ফলে দেশে সংক্রমণ কম হয়েছে। মৃত্যুহার কমে গেছে।’
‘উল্লেখিত পদক্ষেপগুলোর কারণে দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। গার্মেন্টস-শিল্প কারখানা খোলা থাকায় দেশের মানুষকে ঘরে বসে থাকতে হয়নি। এসব হয়েছে দেশের স্বাস্থ্যখাত ঠিকভাবে নিরলস কাজ করেছে এবং কোভিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে বলেই,’ বলেন তিনি।
সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যখাতের বাজেট আরও বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্বারোপ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা, নতুন লোকবল নিয়োগ দেবার উপরও গুরুত্ব দেন।
আরও পড়ুন:দেশে করোনায় মৃত্যু ৭ হাজার ছাড়াল
শহর অঞ্চলের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার স্বাস্থ্যসেবার হাতে না থাকায় পরিসংখ্যানগত দিক দিয়ে স্বাস্থ্যসেবার মান আরও ভালো হচ্ছেনা উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আরবান হেলথ কেয়ার এখনো লোকাল গভর্নমেন্টের কাছে। লোকাল গভর্নমেন্টের কাছে লোকবলের সেরকম সক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধা কম থাকায় এই সেক্টরে যথেষ্ট উন্নতি দৃশ্যমাণ হচ্ছে না। এর ফলে সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবার পরিসংখ্যানগত মান ব্যাহত হচ্ছে।’
সেমিনারে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, ‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী বছরে ৫০ লাখ মানুষ দরিদ্র হচ্ছে আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচারের ফলে। এর মধ্যে ৬০ ভাগ মানুষ ভারত, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক গিয়ে চিকিৎসা নিতে দরিদ্র হয়ে যায়। কেন মানুষকে চিকিৎসা নিতে বিদেশমুখী হতে হয় সেটি নিয়ে আমাদেরকে ভাবতে হবে ও করণীয় ঠিক করতে হবে।’
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এদেশের মাটিতে হবেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, দেশে ৬১০টি সরকারি হাসপাতাল আছে, ৯০ হাজারেরও বেশি চিকিৎসক আছে, লাগলে আরও লোকবল বৃদ্ধি করা হবে কিন্তু চিকিৎসা নিতে যেন মানুষ দরিদ্র হয়ে না যায় সে ব্যাপারে আরও কাজ করতে হবে।’
‘চিকিৎসার জন্য ভালো সেবা নিশ্চিত করা না গেলে মানুষ বিদেশে যাবে এবং চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে দরিদ্র হয়ে যাবে। এটি হতে দেয়া যাবেনা,’ বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে এখন ৪৯টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে বলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জানান এবং এগুলোতে মানুষের চিকিৎসা নিতে বিদেশমুখীতা কমানোর জন্য যথোপযুক্ত উদ্যোগ রাখা হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন:সরকার বিনামূল্যে এইডস রোগীদের চিকিৎসা চালু রেখেছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহাদৎ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ ডা. ভুপিন্দ্র আওলাখ বক্তব্য দেন।