তিনি বলেন, ‘সহজলভ্য হওয়ার সাথে সাথেই সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে এবং উদ্ভাবিত হতে চলেছে এমন ভ্যাকসিন বুকিংয়ের জন্য ইতোমধ্যেই অগ্রিম অর্থ প্রদান করা হয়েছে।’
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাগুরা, নারায়ণগঞ্জ, যশোর ও পাবনায় তিনটি সেতুসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য বিষয়গুলোকে আলাদা রেখে কীভাবে জনগণকে সুরক্ষিত করা যায় (করোনাভাইরাস থেকে) সে বিষয়ে আমরা বিশেষ মনোযোগ দিয়েছি। সুতরাং, দেশের মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই।’
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের আরও একটি ঢেউ আসছে এবং সরকার এখন থেকেই সেটি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসছে, মাস্ক পরতেই হবে: প্রধানমন্ত্রী
সবাইকে আবারও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজে সুরক্ষিত থাকুন এবং অন্যকেও সুরক্ষিত রাখুন। এটি একটি যৌথ দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, সরকার ও জনগণের এখন করোনাভাইরাসের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আমরা এটি করতে সক্ষম হব (সফলভাবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে),’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিজগুলো উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে
মাগুরা, নারায়ণগঞ্জ এবং যশোরে নবনির্মিত সেতু উদ্বোধনের সময় শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার দেশে যোগাযোগের একটি বড় নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
‘ফলস্বরূপ, আজ আমাদের অর্থনীতি খুব সক্রিয়, আমরা এতগুলো প্রকল্প শুরু করেছি এবং সেগুলো আমরা সম্পন্ন করব ইনশাল্লাহ।’
শেখ হাসিনা বলেন, যশোর, মাগুরা এবং নারায়ণগঞ্জে নবনির্মিত সেতুগুলো অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং পণ্য পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজতর হবে।
এগুলো সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে দক্ষিণ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ করে তুলবে। এছাড়া মেগা এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হলে প্রতিটি অঞ্চল বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চল আরও উন্নত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সবসময় দূরদর্শী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ এবং এটি সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে গৃহীত সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে।
তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সরকার এ বছর সব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি বলে জানান তিনি।
প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, এবং সশস্ত্র বাহিনীসহ সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে উল্লেখ করে, এ প্রচেষ্টার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন সরকার প্রধান।
এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং এলজিআরডি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলাদেশ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং পাবনা থেকে ব্যবসায়ী অঞ্জন চৌধুরী অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।
এর আগে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি নবনির্মিত উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্পের আওতায়, মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় মধুমতি নদীর ওপর প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ‘শেখ হাসিনা সেতু’। ৬০০ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর মাধ্যমে মাগুরা, নড়াইলসহ আশপাশের এলাকার মানুষের জন্য ফরিদপুর হয়ে ঢাকার সাথে যোগাযোগ আরও সহজতর হবে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নির্মিত হয়েছে ৫৭৬ মিটার দীর্ঘ ‘গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক সেতু’ এবং যশোরের অভয়নগরে তৈরি করা হয়েছে ৭০২ মিটার দীর্ঘ ‘ভৈরব সেতু’।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর মাছ শিকার ও পোশাক সেলাইয়ের ছবি ভাইরাল