প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ এবং জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর এর প্রভাব মোকাবিলায় সম্মিলিতভাবে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
মঙ্গলবার জাপানের নিউট্রিশন ফর গ্রোথ সামিটে এক ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলমান করোনা মহামারি আমাদের পুষ্টি কার্যক্রমগুলোতে একটি জোর ধাক্কা দিয়েছে। এই মুহুর্তে করোনার ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনা বিশ্বের সামনে পাঁচটি প্রস্তাব রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী উচ্চ ফলনশীল পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গবেষণায় সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: বাণিজ্য ও সংযোগের ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী তার তৃতীয় প্রস্তাবে দুর্যোগের সময় সুরক্ষিত ও নিরাপদ থাকার জন্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে খাদ্য ব্যাংক গড়ে তোলার কথা বলেছেন।
তার চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা খাদ্যে পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধির জন্য সর্বোত্তম অনুশীলন এবং দক্ষতা বিনিময়ের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
পরিশেষে তিনি উন্নয়নশীল বিশ্বে খাদ্য উৎপাদনকে বাধাগ্রস্তকারী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চরম পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জলবায়ু অভিযোজন তহবিল বিতরণ করতে উন্নত দেশগুলোকে আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত এক দশকে দেশটি অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিতে অভূতপূর্ব সাফল্য এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা চালু করা হয়েছে। অসচ্ছল গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের নগদ ভাতা দেয়া হয়, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরের খাবার চালু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা খাদ্য নিরাপত্তা এবং উন্নত পুষ্টির লক্ষ্যে শস্য, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম এবং ফলের উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনছি। ইতোমধ্যে আমাদের এসব কাজের সুফল আমরা পেতে শুরু করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমাদের লক্ষ্য আমাদের পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদনে মনোযোগ দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর