শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জয়া কনটেইনার টার্মিনালে বাংলাদেশি ফিডার ভেসেলকে অগ্রাধিকারমূলক নোঙ্গরের সুবিধা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শুক্রবার পাওয়া এক তথ্যে জানা যায়, শ্রীলঙ্কা বন্দর কর্তৃপক্ষের (এসএলপিএ) চেয়ারম্যান প্রশান্ত জয়মান্না সম্প্রতি কলম্বোতে একটি আলোচনায় এই ঘোষণা দেন।
তিনি কলম্বো বন্দরের বর্তমান সুবিধার পাশাপাশি ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে বাংলাদেশকে অবহিত করেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশন দীর্ঘদিন ধরে এসএলপিএ-র সঙ্গে এই অগ্রাধিকার বার্থিং ইস্যু নিয়ে আলোচনা করছে।
শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ হাইকমিশন সম্প্রতি প্রথম অর্থনৈতিক কূটনীতি সপ্তাহ পালনের জন্য চট্টগ্রাম ও কলম্বো বন্দরের মধ্যে শিপিং যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে অংশীজনদের নিয়ে একটি পরামর্শ ফোরামের আয়োজন করে।
এর উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রাম ও কলম্বো বন্দরগুলোর মধ্যে কাজ করতে গিয়ে সৃষ্ট সমস্যাগুলো বোঝার সুবিধা ও বৃহত্তর সংযোগ এবং সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষা। এছাড়া দুটি বন্দরের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করাও এর অন্যতম উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন: নেদারল্যান্ড-বাংলাদেশের সম্পর্কের ৫০ বছর: পানির গল্প নিয়ে ‘বই’ উন্মোচন
এসময় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা, টার্মিনাল অপারেটর, মেইন লাইন অপারেটর, ফিডার অপারেটর, মালবাহী ফরওয়ার্ডার এবং পাশাপাশি দুটি বন্দরের ব্যবহারকারীরা তাদের নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেন।
শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কলম্বো বন্দরের সম্ভাবনার কথা আলোচনা করেন।
তিনি মহামারি ও যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক লজিস্টিক অপারেশনে পরিবর্তন এবং কলম্বো বন্দর থেকে সম্ভাব্য প্রণোদনার প্রস্তাবের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেছেন।
কলম্বোস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, এসএলপিএর চেয়ারম্যান, প্রাইভেট টার্মিনাল অপারেটর এবং শ্রীলঙ্কার শিপিং কমিউনিটি বাংলাদেশ ব্যবহারকারীদের অব্যাহত অগ্রাধিকার দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
কলম্বো বন্দর নিয়ে সাম্প্রতিক নেতিবাচক মিডিয়া প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তারা স্পষ্ট জানায়, দেশের সংকট পরিস্থিতির দ্বারা তাদের বন্দরের কার্যক্রম প্রভাবিত হয়নি।
উভয় পক্ষই দুই দেশের সকল অংশীজনের মধ্যে রিয়েল টাইম যোগাযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি জানান, গত বছর কলম্বো বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের কনটেইনার যাতায়াত উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
বাংলাদেশের অংশীজনদের প্রতিনিধিরা কলম্বো বন্দর সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি, শিপিং অপারেশনে উদীয়মান প্রবণতা এবং চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
পরবর্তী ইন্টারেক্টিভ সেশনে দুইপক্ষের প্যানেলিস্টরা অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
এতে শ্রীলঙ্কার শিপিং সম্প্রদায়ের সিনিয়র প্রতিনিধিরা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কর্ণফুলী গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং এইচআর লাইনস আনিস উদ দৌলা, মোহাম্মদী গ্রুপের হেড অব অপারেশন অ্যান্ড মার্কেটিং এবং ডিএসভি লজিস্টিকসের কান্ট্রি হেড জুমলিংকের মাধ্যমে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: লিসবনে জাতিসংঘ মহাসাগর সম্মেলনে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী