দেশের কারাগারগুলোয় আগামী ১ মাসের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (৬ জুন) এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কারা কর্তৃপক্ষকে শূন্য পদে কারা চিকিৎসক নিয়োগের অগ্রগতি এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের গ্রামীণ কল্যাণের লভ্যাংশ দেওয়ার রায়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান।
মঙ্গলবার (৬ জুন) শুনানিকালে এখন কারা হাসপাতালগুলোতে কতজন চিকিৎসক আছেন-আদালতের এমন প্রশ্নে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ১২৫ জন।
তখন আদালত জানতে চান, বাকিগুলো পূরণ করছেন কিভাবে?
জবাবে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, শূন্যপদ পূরণের কাজ চলছে।
আদালত তখন বলেন, কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ।
আদালত আরও বলেন, শুধু চিঠি চালাচালি করছেন। ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবা করার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকে না।
ধনীরা কারাগারে গেলেও তাদের জন্য ডিভিশনের ব্যবস্থা থাকে। গরিবদের বাঁচান।
এরপর কারা চিকিৎসক নিয়োগের বিধিমালা চূড়ান্ত করা কথা বলে আদালত কারা কর্তৃপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা এক মাস পর তারিখ রাখছি। এর মধ্যেই চূড়ান্ত করবেন। এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর আদালতে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬৮ কারাগার এবং কারা হাসপাতালে ১৪১টি চিকিৎসকের পদের বিপরীতে প্রেষণে ও সংযুক্ত মিলিয়ে মোট ৯৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
এরপর আদালত শূন্য পদগুলোতে অবিলম্বে কারা চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়ে অগ্রগতি জানাতে বলেন।
এর ধারাবাহিকতায় মামলাটি কার্য তালিকায় আসে। ২০১৯ সালে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
তখন আদালত কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে কারাগারের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসক নিয়োগসহ কারাগারের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দিয়ে কারাগারে ২৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা জানায়। পরে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্ট শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকায় পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
৪২ ঘন্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত; পুলিশ সুপার যোগাযোগ করায় অসন্তোষ হাইকোর্টের