এ ক্রাশ প্রোগ্রামে ডিএনসিসির সকল মশক নিধনকর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ মশক নিধনের সাথে যুক্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী একটি অঞ্চলে একদিন করে কাজ করবেন। ডিএনসিসির সকল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও একসাথে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করছেন। অভিযানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মশক নিধনকর্মী মশার কীটনাশক প্রয়োগ করছেন।
আরও পড়ুন:ঢাকাবাসীকে মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে কাজ করছে দুই সিটি করপোরেশন, এক মন্ত্রণালয়
সোমবার মিরপুর-২ অঞ্চলে (অঞ্চল-২) এ অভিযান সম্পন্ন হয়। মঙ্গলবার মিরপুর-১০ অঞ্চলে (অঞ্চল-৪), ১০ মার্চ কারওয়ান বাজার অঞ্চল (অঞ্চল-৫), ১১ মার্চ মহাখালী অঞ্চল (অঞ্চল-৩), ১৩ মার্চ ভাটারা অঞ্চল (অঞ্চল ৯) ও সাতারকুল অঞ্চল (অঞ্চল-১০), ১৪ মার্চ উত্তরা অঞ্চল (অঞ্চল-১), ১৫ মার্চ দক্ষিণখান অঞ্চল (অঞ্চল-৭) ও উত্তর খান অঞ্চল (অঞ্চল-৮) এবং ১৬ মার্চ হরিরামপুর অঞ্চলে (অঞ্চল-৬) এই অভিযান পরিচালিত হবে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় পল্লবীর সাগুফতা খাল, ইনডোর স্টেডিয়াম, মিরপুর সেকশন-৬ ও মিল্কভিটা এলাকা পরিদর্শন করেন। বিকাল ৪টায় তিনি মিরপুর-১৩ নম্বর এলাকা পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন:অ্যানোফিলিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই: এলজিআরডি মন্ত্রী
পরিদর্শনকালে মেয়র বলেন, ‘ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলে ৫৪টি ওয়ার্ড আছে। ইতিপূর্বে এই ওয়ার্ডগুলোতে সকালে মশার লার্ভিসাইড এবং বিকালে এডাল্টিসাইড দেয়া হতো। কিন্তু আমরা কীটতত্ত্ববিদদের সাথে কথা বলেছি, তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী টোটাল সিস্টেমটাকে এই প্রথমবারের মতো পরিবর্তন করলাম। এটি অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমরা এখন প্রতিদিন দশটি অঞ্চল নয়, বরং এখন অঞ্চলভিত্তিক মশক নিধন করব। আজকে এসেছি অঞ্চল-২ এ, এখানে আমাদের আটটি ওয়ার্ড আছে। এই আটটি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৬০ জন করে মশক কর্মী দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আমরা মশার প্রজননস্থলের সর্বত্র ‘টোটাল সুইপিং’ করতে চাই। এ জন্য আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রকৌশল বিভাগ ও বর্জ্য বিভাগ একত্রে কাজ করছে।
মেয়র আরও বলেন, আমরা মঙ্গলবার যাব অঞ্চল -৪ এ। অঞ্চল-৪ শেষ করে অঞ্চল-৫ এ। এইভাবে আমরা কাজগুলো করছি এবং এভাবে আমরা দেখতে চাচ্ছি কি রেজাল্ট হয়।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আজ অভিযান শুরু করেছি, দশ দিন পরে একদিন বিরতি দিয়ে আবার আমরা কাজ শুরু করবো। এভাবে দশটা অঞ্চলে দশ দিন কাজ করবো। মশক নিধনের সকল লোকজন , সকল ধরনের ইকুইপমেন্ট ভোর ছয়টায় এখানে নিয়ে এসেছি। আজকের অভিযান নিয়ে রাত আটটায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আমরা মিটিং করবো। আজকের অভিযান থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীকাল ভালো করবো। আমরা বসে নাই। আমি সকলের সহযোগিতা চাচ্ছি।
মিরপুরের মিল্কভিটা কারখানার (বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি.) অভ্যন্তরে আবর্জনার স্তুপ, ঝোপঝাড় ও কচুরিপানাপূর্ণ জলাশয়ে অসংখ্য মশার লার্ভা দেখে মেয়র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বারবার নোটিশ দেয়ার পরেও ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ ও দণ্ডবিধি ১৮৬০ অনুযায়ী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে নিয়মিত মামলা করা হয়।
এছাড়া মশার লার্ভা পাওয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৪টি মামলায় ৬১ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সড়ক ও ফুটপাতে অবৈধভাবে মালামাল রাখায় তিনি তা ৫ হাজার ৭৩৮ টাকা স্পট নিলাম করেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মশার লার্ভা পাওয়ায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন ১টি প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মশার লার্ভা পাওয়ায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবেদ আলী ১টি প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়েদুর রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, তাইজুল ইসলাম চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।