তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় ফিরে খালেদা জিয়া গ্রেনেড হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করেছিলেন। ওই হামলার সাথে জড়িতরা পরে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছিল যে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানও সেই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হামলার ১৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা এসব অভিযোগ করেন। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনার আয়োজন করে এবং প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এতে অনলাইনে যোগ দেন।
বিএনপি-জামায়াত সরকার এ হামলা চালাতে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের জড়ো করেছে ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং তাদের নিরাপদে বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি সরকার (তৎকালীন) থেকে পৃষ্ঠপোষকতা না করা হয়ে থাকে, তাহলে ২১ আগস্টের মতো এমন গ্রেনেড হামলা চালানো সম্ভব ছিল না।’
‘তারা (বিএনপি-জামায়াত সরকার) মনে করেছিল (হামলায়) আমি মারা গেছি। কিন্তু যখন জানল আমি মারা যায়নি তখন জঙ্গিদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিল তারা,’ বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা জানান, হামলার পর পুলিশ হতাহতদের উদ্ধারের পরিবর্তে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাটিপেটা করেছিল।
তিনি আরও জানান, বিএনপি-জামায়াতপন্থী চিকিৎসকরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আওয়ামী লীগের আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসা দেননি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রোগীকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
‘তারা যদি (বিএনপি-জামায়াত) সরাসরি এ হামলার সাথে জড়িত না হতো তাহলে কি এভাবে তারা বাধা দিত (হতাহতদের চিকিৎসা, অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং প্রমাণ ধ্বংস করা),’ প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, হত্যাকাণ্ড চালানো তাদের অভ্যাস ছিল কারণ তারা দেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নয়।
বিএনপি-জামায়াত চক্র যে বিষবৃক্ষ লাগিয়েছিল, বাংলাদেশ এখনও তার ফল ভোগ করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আমরা একে একে এসব উপড়ে ফেলছি।’
দলের সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নির্মূল করার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে বর্বর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
হামলায় দলের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান। আগত হন কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক মানুষ। হামলায় বেঁচে যাওয়া অনেকে আজও পঙ্গুত্ববরণ করে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
ওই হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। মানববর্ম তৈরি করে তাকে রক্ষা করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।