ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ কয়েক দিনের মধ্যে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে বলে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন ‘আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আসছে, এটি এখন বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।’
রবিবার সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২২৫টি স্থাপনার উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ইতিহাস নিয়ে নতুন প্রজন্মের আগ্রহে প্রধানমন্ত্রীর সন্তুষ্টি প্রকাশ
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: উন্নয়নশীল বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী বললেন, সংগ্রামের মাধ্যমে এই সম্মান এসেছে
এ সময় তিনি দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ১১০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি জেলা ত্রাণ গুদাম-কাম-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র ও পাঁচটি মুজিব কিল্লার উদ্বোধন করেন।
একইসাথে সারাদেশে ৫০টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের এই দুর্যোগ প্রশমন করতে আমরা ইতোমধ্যে যথেষ্ট সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ইনশাল্লাহ আমরা সতর্ক থাকব এবং ঝুঁকি হ্রাস করতে পারব।’
আরও পড়ুন: সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ বিশ্বে প্রশংসিত: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উত্তর আন্দামান সাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর মধ্যে নিম্নচাপটি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরের সবচেয়ে কাছে রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ঝড়টি সম্ভবত উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূলে পৌঁছাবে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশে আঘাত হানলে উপকূলীয় মানুষকে আশ্রয় দেয়ার জন্য ও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য যা প্রয়োজন তার চেয়ে তিনগুণ বেশি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেছে সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। তাছাড়া, বাংলাদেশে মাঝে মাঝে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগও আসে। সব মোকাবিলা করেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং আমরা এগিয়ে যাব।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রতিটি দুর্যোগের সময় বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করতে অসংখ্য পদক্ষেপ নিয়েছে এবং যে কোনও সম্ভাব্য প্রাণহানি রোধে জোর দিয়েছে।
বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় মানুষ তাদের বাড়ির কাছে খেজুর গাছ লাগাত যা তাদেরকে প্রাকৃতিকভাবে বজ্রপাতে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করত। এখনকার মানুষ তা ভুলে গিয়েছে। এখন আবার তাল গাছ লাগানোর প্রয়োজনীয়তা ফিরে এসেছে।’
তিনি বলেন, সরকার যে কোনও দুর্যোগ থেকে মানুষকে বাঁচাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে।
ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ থেকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ গ্রহণ করেছে সরকার।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়েছিল।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মহসিন প্রমুখ এ সময় বক্তব্য দেন।