বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তে ঘটা ছোটখাটো সমস্যা দু’দেশের সীমান্ত বাহিনীর বৈঠকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত আলোচনার মাধ্যমে সব বড় সমস্যা নিষ্পত্তি করেছে। দু’দেশের সীমান্তে ঘটে এমন কিছু ছোটখাটো ঘটনা বিজিবি ও বিএসএফ বৈঠক করে সমাধান করতে পারে।’
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শ্রিংলা বলেন, আমরা এ সমস্যার সমাধান চাই। প্রধানমন্ত্রীও তার সঙ্গে একমত হয়েছেন বলে জানান করিম।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা বিব্রতকর: শ্রিংলাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কোভিড -১৯ মহামারির ধাক্কা থেকে পুনরুদ্ধারের পর ভারতে স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। এছাড়া করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে তারা সতর্ক আছেন বলেও জানান তিনি।
শ্রিংলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির শুভেচ্ছা জানান। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের মাধ্যমে শেখ হাসিনাও মোদিকে শুভেচ্ছা জানান।
কোভিড-১৯ মহামারি সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং ভারতেও ভালো প্রবৃদ্ধি রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে শ্রিংলা বলেন, ‘এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিশেষ বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ।’
কোভিড-১৯ পরিস্থিতির পর জাতিসংঘে ভারত ও বাংলাদেশ কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি যৌথ ছবি প্রদর্শনীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব।
নতুন প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের ব্যাপারে আলোচনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের বাংলাদেশ সফর দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ: ভারত
শিলিগুড়ি-পার্বতীপুর, ঢাকা-শিলিগুড়ি এবং ঢাকা-জলপাইগুড়ি রেল যোগাযোগ পুনরায় স্থাপনের ওপরও জোর দেন শ্রিংলা।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশও কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ও পরিবারের সদস্যদের বন্দিত্বের দিনগুলো স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতের স্বীকৃতি তাদের অভিভূত করেছিল বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন যা দুই দেশের জন্য উপকারী হবে।
বাংলাদেশে ৯৯ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘যেখানে গ্রিড লাইন নেই সেখানে সৌরবিদ্যুতের সহায়তা দিচ্ছে সরকার।’
বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি উপদেষ্টা অশোক মালিক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আগামী ৫০ বছরে দু’দেশকে অনেক কিছু করতে হবে: দোরাইস্বামী