তিনি বলেন, বাংলাদেশে দক্ষ ও অদক্ষ লোকের প্রাচুর্য রয়েছে এবং জাপানের শ্রমশক্তির চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। যা বাংলাদেশের জন্য জাপানে কর্মী পাঠানোর সুবর্ণ সুযোগ। সে প্রেক্ষিতে দূতাবাসের সঠিক উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনার ফলশ্রুতিতে জাপানে দক্ষ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যে দুদেশের মধ্যে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ দূতাবাসের সার্বিক সহযোগিতায় জাপানের ইন্টারন্যাশনাল পারসনেল ম্যানেজমেন্ট (আইপিএম) ও বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) যৌথ আয়োজনে টোকিওর সাঙ্গিও কাইকান হলে বাংলাদেশের জনসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক এক সেমিনারে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
জাপানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওরিয়েন্টেশন কর্মশালার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সেমিনারে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, গত জানুয়ারি মাসে টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও ফুজিতসু রিসার্চ ইন্সটিটিউট যৌথভাবে জাপানে বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা নিয়ে ফুজিতসু রিসার্চ ইন্সটিটিউটে একটি সেমিনার আয়োজন করে। সেখানে জাপানের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক প্রতিনিধি যোগদান করেন। সেমিনারে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা তুলে ধরা হয় ফলশ্রুতিতে জাপানি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর জুন মাসে ঢাকায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং ফুজিতসু রিসার্চ ইন্সটিটিউটের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, সমঝোতা স্মারকটির মূল প্রতিপাদ্য ছিলো ফুজিতসু রিসার্চ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের আইটি ইঞ্জিনিয়ার, গ্রাজুয়েট ও প্রফেশনালদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে যাতে তারা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত সম্পর্কে জাপানি ব্যবসায়ীদের অবহিত এবং বিনিয়োগে সহায়তা করতে পারে। এছাড়া প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীগণ অনেকে জাপানেই চাকরির সুযোগ পাবেন এবং অন্যরা জাপানের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবেন।
ফুজিতসু রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রেসিডেন্ট হিদেকি কিওয়াকি বলেন, তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে আইটি ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা এবং বাংলাদেশকে ‘বিগ ডাটা’, এ আই, রোবটিক্স ইত্যাদি প্রযুক্তিতে দক্ষ মানব-সম্পদ তৈরিতে সহায়তা করা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের যুগ্মসচিব মো. খায়রুল আমিন, আইপিএমের প্রেসিডেন্ট মিজ সেতসুকো ইকেদা, বোয়েসেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আরিফুল হক, ম্যানেজার অফ ফরেন ওয়ার্কার্স সাপোর্ট ডিপার্টমেন্টের ম্যানেজার নাওকি ডই, জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) উপপরিচালক ও আইপিএমের হিদেয়ি সাকাশিতা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দূতাবাস, টোকিও ২০১৭ সালে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সাথে অনুরূপ একটি উদ্যোগ নিয়েছিলো যা ‘মিয়াজাকি মডেল’ নামে পরিচিত। মডেলটির মাধ্যমে জাইকা বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মীদের বাংলাদেশেই প্রশিক্ষণ প্রদান এবং পরবর্তীতে জাপানে নিয়োগের ব্যবস্থা করছে।