বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন বলে আগে যে বক্তব্য দিয়েছেন-সেই বক্তব্যে অনড় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক আবারও প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন জেল দিয়ে কী কোনদিন কারো রাজনীতি বন্ধ করা যাবে?
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ুসহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
সাংবাদিকরা মন্ত্রীদের সাম্প্রতিক মন্তব্যের উল্লেখ করে প্রশ্ন করলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতির বিষয়টি বুঝতে হবে। আইনে যাই থাক। ইরানের খোমেনির রাজনীতি কী বন্ধ ছিল? বঙ্গবন্ধু জেলে থেকে রাজনীতি করেছেন না।
এছাড়া কনভিকশন (দণ্ডিত) হয়নি, কনভিকশন হলেই কী বঙ্গবন্ধু রাজনীতি বন্ধ করে দিতেন? আমি সেই জায়গা থেকে বলেছি। জেলে বসেও তো রাজনীতি করা যায়। আমি তো সেই কথাটিই আপনাদের বলেছিলাম। আবারও বলছি।’
আজ নেদারল্যান্ডসের বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য পিম ভ্যান স্ট্রিয়েনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা নিয়ে ফের বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে তো বিদ্রোহী ও বিপ্লবীরা এভাবেই রাজনীতি করেছেন। খালেদা জিয়া ইলেকশনে যেতে পারবেন না, আইনের কারণে। কিন্তু তার রাজনীতির চিন্তা-চেতনা এগুলো কী তারা বন্ধ করে দেবে নাকি-যে আমি রাজনীতি করবো না।
কিন্তু আপনারা মন্ত্রিসভার সদস্যরা একমত হতে পারছেন না কেন-প্রশ্ন করলে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন আব্দুর রাজ্জাক।
এরপর তিনি বলেন, ক্যাবিনেট কলিগরা বলছেন কীভাবে? আমি ওনাদের সঙ্গে কথা বলিনি, কী বলেছেন। আমাকে যদি কোনো কারণে জেল দেয়। লালু প্রসাদ কী রাজনীতি বন্ধ করেছেন?
‘আমাদের ওবায়দুল কাদের সাহেবও তো বলেছেন, সে (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করতে পারবেন না, আইন অনুযায়ী। সংবিধানে আছে দু-বছরের বেশি সাজা হলে নির্বাচন করা যাবে না। কিন্তু রাজনীতিটা আপনি বন্ধ করবেন কেমনে?’
সংসদে শেখ ফজলুল হক সেলিম বলেছেন খালেদা জিয়া রাজনীতি না করার জন্য মুচলেকা দিয়েছেন-এ বিষয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এটা আমি জানি না, কোথায় মুচলেকা দিয়েছেন খালেদা জিয়া। একটা জানি যে, তারেক জিয়া দিয়েছে। বিদেশে যাওয়ার আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে সে-ই দিয়ে গেছে।’
খালেদা জিয়া তো এখন নির্বাহী আদেশে মুক্ত আছেন-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘জেলে থেকেও তো একজন মানুষ যোগাযোগ রাখতে পারে। জেল দিয়ে কী কোনদিন কারো রাজনীতি বন্ধ করা যাবে? যদি সে আদর্শবাদী রাজনীতিবিদ হয়, দেশপ্রেমিক হয়। গোপনে সে চিঠি লিখে পাঠালো-কর্মীদের নির্দেশনা দিলো। এটা করো, সেটা করো। আমি সেটা মিন করেছি। সেটা সে করতেই পারে।’
নির্বাচনের ১০ মাস আগে আওয়ামী লীগ এ ইসু্যটাকে সামনে আনলো কেন- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘এটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু না। আমর মনে হয় এটা নিয়ে যেটুকু আলোচনা হয়েছে সেটা যথেষ্ট। আমি তো ভারতের দুটি উদাহরণ দিলামই।’
খালেদা জিয়া তো এখন নির্বাহী আদেশে মুক্ত আছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘জেলে থেকেও তো একজন মানুষ যোগাযোগ রাখতে পারে। জেল দিয়ে কী কোনদিন কারো রাজনীতি বন্ধ করা যাবে- যদি সে আদর্শবাদী রাজনীতিবিদ হয়, দেশপ্রেমিক হয়। গোপনে সে চিঠি লিখে পাঠালো- কর্মীদের নির্দেশনা দিলো। এটা করো, সেটা করো। আমি সেটা মিন করেছি। সেটা সে করতেই পারে।’
গত ২২ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে বাধা নেই। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও একই কথা বলেন। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে পারবেন না।