মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় ইলিশ সংকট, তার ওপর হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার লক্ষাধিক জেলে।
শুক্রবার রাতে তেলের দাম বৃদ্ধি ঘোষণার পর শনিবার থেকেই অনেক জেলেই মাছ ধরতে যায়নি।
সদরের তুলাতুলি মাছঘাট এলাকায় দেখা গেছে, অনেক জেলে নদী থেকে নৌকা, ট্রলার ও জাল তুলে নিয়েছে। অনেকে আবার ঘাটে অলস সময় পার করছেন। এতে করে মাছের আড়ৎগুলোতে অনেকটা জেলে শূন্য ছিল।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি: চট্টগ্রামে বাস চলাচল বন্ধ
জেলেরা জানান, এমনিতেই নদীতে দিন রাত জাল ফেলেও তেমন একটা ইলিশ পাওয়া যায় না। দুই-চারটি পাওয়া গেলে তা দিয়ে খরচের টাকাও উঠে না। তার ওপর এখন তেলের দাম বৃদ্ধিতে তাদের খরচ আরও বেড়ে গেল। তাই তারা নদীতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
জেলে আমিনুল জানান, শুক্রবার বিকালে ৮৫০ টাকার ১০ লিটার ডিজেল কিনে নদীতে গেছেন। ফিরে এসে মাত্র ৫০০ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। পরদিন সকালে তেলের জন্য গেলে প্রতি লিটার তেল ১১৫ টাকা চাচ্ছে দেখে কন্টেইনার নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এই পরিস্থিতি কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তিনি।
জেলেরা জানান, তেল ও খাবারসহ কয়েক হাজার টাকার মালামাল নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যেতে হয়। গুটি কয়েক ইলিশ পাওয়া গেলেও তা দিয়ে খরচের টাকাও ওঠে না।
আড়তদার মো. ইউনুছ জানান, তার আড়তে ১২টি জেলে ট্রলার মাছ বিক্রি করে। নদীতে মাছ কম থাকায় আগে থেকেই অর্ধেক ট্রলার নদীতে যায় না। এর মধ্যে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় শনিবার সকাল থেকে একটি ট্রলারও নদীতে যায়নি।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: গণপরিবহন বন্ধে দেশজুড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
ভোলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভোলা জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা এক লাখ ৪৪ হাজার। এর মধ্যে সাগরে মাছ শিকারে যায় ৬৪ হাজার জেলে। তবে নিবন্ধিন ছাড়াও আরও প্রায় কয়েক হাজার জেলে রয়েছে।
ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানান, তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে জেলেদের ওপর প্রভাব পড়বেই। কারণ তেলের ওপর নির্ভর করেই জেলেদের নদীতে যেতে হয়। তবে তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে মাছের মূল্যও বৃদ্ধি পাবে।