টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে সকল যাত্রীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুট ও এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার ভোরে টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার রাজা মিয়া (৩২) টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা গৌরস্থান এলাকায় মৃত হারুন অর রশীদের ছেলে। রাজা ডাকাতদলের সদস্য। বাসের চালক ও হেলপাড়কে জিম্মির পর রাজা গাড়ি চালিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।
তিনি বলেন, চলন্ত বাসে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ডাকাতদলের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজা টাঙ্গাইলের যাত্রীবাহী বাস ঝটিকা সার্ভিসের একজন চালক। দীর্ঘদিন যাবত তিনি টাঙ্গাইল নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। বাকিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
গ্রেপ্তার রাজাকে আজ আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিবাগতরাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেয়া হয়। সেখান থেকে ৫ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে তিনজন যাত্রী ওঠেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আরও চারজন যাত্রী ওঠে। নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া কিছু দূর যাওয়ার পর আরও তিনজন যাত্রী সেজে বাসে ওঠে।
আনুমানিক রাত ১২টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকা পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা হঠাৎ করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুরোবাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। টাঙ্গাইলের গোড়াই এলাকায় থেকে বাসটিকে ঘুরিয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা কালিহাতী হয়ে মধুপুরে আসে। এরই মধ্যে ডাকাত দলের সদস্যরা সবারহাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করেন। এরপর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়।
পরে ডাকাত দলের সদস্যরা গাড়িতে থাকা এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ব্যাপারে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে। হেকমত নামে কুষ্টিয়ার বাসিন্দা ও ওই বাসের এক যাত্রী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন।
এদিকে ভুক্তভোগী ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, প্রধান আসামীসহ গ্রেপ্তার ২