টিকার চালান বহনকারী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট সোমবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে বলে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের এসপি আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।
এর আগে, বাংলাদেশের পক্ষে টিকার বিষয়ে সেরামের সাথে চুক্তি করা বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন যে ডোজগুলো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি টঙ্গিতে বেক্সিমকো ফার্মার গুদামে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে টিকাগুলো সব জেলায় পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: দেশে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ
রবিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের ২০ লাখ টিকা দিয়েছে ভারত সরকার। চুক্তি অনুয়ায়ী কাল আসবে ৫০ লাখ। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকি (আড়াই কোটি) টিকা আসবে। এসব টিকা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। পরের ধাপে টিকা আসলে ঢাকাসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কোথায় তা রাখা হবে সেটিও ঠিক করে রাখা হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা হাসপাতালে নার্সদের টিকা দেয়া শুরুর মাধ্যমে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।
আরও পড়ুন: দেশে কোভিড-১৯ টিকাদান শুরু ২৭ জানুয়ারি
‘টিকা কীভাবে প্রয়োগ করা হবে সে জন্য আমাদের জাতীয় কমিটি আছে। তারা এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি শেষ করেছেন,’ বলেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আগে ফ্রন্টলাইনারদের টিকা দেয়া হবে।। পর্যায়ক্রমে যাদের টিকা লাগবে তাদের সবাইকে তা দেয়া হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশে এখনও বেসরকারিভাবে টিকা আনার অনুমতি দেয়া হয়নি। যদি কেউ বেসরকারিভাবে টিকা দিতে চায়, সে বিষয়ে আমরা পরে দেখব।’
আরও পড়ুন: কোভিড টিকা কি মিলিয়ে মিশিয়ে ব্যবহার করা যাবে?
গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ, বেক্সিমকো ফার্মা ও ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। পরে ডিসেম্বরে বেক্সিমকো ফার্মার মাধ্যমে সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে তিন কোটি কোভিড-১৯ টিকা আমদানির চুক্তি করে সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকার সেরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে মোট তিন কোটি ডোজ টিকা আমদানি করবে।
একটি বড় ট্রায়ালে প্রমাণিত হয়েছে যে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতকৃত টিকা ৭০ শতাংশ কার্যকর। এটি তুলনামূলক সাশ্রয়ী ও সংরক্ষণ করা সহজ এবং বিশ্বের যে কোনো স্থানে পরিবহন করাও সহজতর।
আরও পড়ুন: করোনার টিকা সংরক্ষণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার নির্দেশ
অক্সফোর্ড গবেষকরা প্রায় দশ মাসে ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যেটি তৈরি করতে এক দশক বা এর বেশি সময় প্রয়োজন হয়।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকার ট্রায়ালে ২০ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক জড়িত ছিলেন, যাদের অর্ধেক যুক্তরাজ্যে এবং বাকিরা ছিলেন ব্রাজিলের। ট্রায়ালের চূড়ান্ত ফলাফলে গবেষকরা জানান, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করা এ করোনা টিকা মানব শরীরে ৯০ শতাংশ কার্যকরী। একটি ডোজ প্রয়োগে এটি শরীরে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত এবং অন্য একটিতে ৬২ শতাংশ কার্যকার। ফলে গড়ে এই টিকার কার্যকারিতা ৭০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: টিকা নিয়ে গুজব ছড়ানো, রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকুন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী