প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওমানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রশংসা করে বলেছেন, তারা দু'দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের অর্থনীতিতে যেমন বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদান রয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও অবদান রয়েছে। উভয় অর্থনীতিই শ্রমশক্তির সুফল পাচ্ছে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার বিন আবদুল করিম আল-বুলুশি বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পশ্চিম এশিয়ার দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পারফরম্যান্সের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন ওমানের রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ‘এটা সত্য এবং তারা উভয় অর্থনীতির জন্য কাজ করছে।’
আরও পড়ুন: আমরা আমাদের দরজা বন্ধ রাখতে পারি না: ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ওমান দীর্ঘদিন ধরে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে এবং বর্তমানে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছে।
তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণ হতে পারে।’
এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের সময় ওমানের সহায়তার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত জানান, ওমানে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন।
তিনি বলেন, 'এটা (বিধিনিষেধ) সুনির্দিষ্ট করে বাংলাদেশের জন্য নির্ধারণ করা হয়নি। চাহিদা নির্ধারণের জন্য আমরা পর্যায়ক্রমে শ্রমবাজার পর্যালোচনা করি। সেই পর্যালোচনার ভিত্তিতে আমরা অনেক সময় যেসব দেশে জনবল বেশি, সেসব দেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া স্থগিত করি। স্থগিতাদেশ শিথিল করার জন্য আপনাকে পরবর্তী পর্যালোচনা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
বাংলাদেশের ওপর কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে- বিষয়টি যে এমন নয় তা স্পষ্ট করেন তিনি।
'কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটা এমন ছিল না। জনশক্তি ভিসা ছাড়া ফ্যামিলি ভিসা ও ট্যুরিস্ট ভিসাসহ অন্য সব ভিসা দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশিদের জন্য বর্তমানে ১০টি ক্যাটাগরিতে ওমানের ভিসার দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তার সরকারের কাছে চিঠি পাঠানোর পরামর্শ দেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষে আলোচনা করতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, 'আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি, যাতে শিগগিরই ওয়ার্কিং ভিসা চালু করা যায়।’
সার আমদানি ইস্যুতে রাষ্ট্রদূত বলেন, তার সরকার এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সরকারের আলোচনা করার প্রস্তাব করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং জানুয়ারিতে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি আরও বলেন, হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ করলে ভালো হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আপনাকে নিয়ে গর্ব করতেন।’
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে একটি ওমানি নৌকার রেপ্লিকা উপহার দেন।
সেখানে লেখা ছিল, 'দৃঢ়তা ও সাহসিকতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মশাল বহনকারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফফার আলবুলুশির পিক্ষ থেকে অভিনন্দন।’
বৈঠকে অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ২০৩৫ সালের মধ্যে হাইড্রোজেন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় বাংলাদেশ: সংসদে প্রধানমন্ত্রী