তিনি বলেন, ‘বিচারাধীন ৩৬ লাখ ৬০ হাজার মামলার যে কথা বলা হচ্ছে সেটার সঙ্গে কিন্তু কিছুটা পার্থক্য আছে। এটা যাই হোক আমাদের এই বছর লক্ষ্য থাকবে মামলা জট থেকে অন্তত পক্ষে ৫ থেকে ৬ লাখ মামলা কমানো। আর মামলা কমানোর যে পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি তা কিন্তু অবাস্তব না।’
বুধবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী বিচারকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।
মামলা কমানোর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিচারিক আদালতে লোকবল বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সমাজে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পেশাগত জীবনে অন্যের অনুসরণীয় হওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিচার সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সততার ভিত্তিতে চারিত্রিক দৃঢ়তা ও স্বচ্ছতা হতে হবে কর্মজীবনের মূলমন্ত্র।’
লোভ কিংবা অসততার কারণে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে যাতে কোনো হতাশা বা বিরূপ ধারণার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, যোগ করেন তিনি।
‘জনগণের দ্রুত ও সহজে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। গতানুগতিক বা দায়সারা ভাব পরিহার করে কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিতে হবে,’ বলেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালের পহেলা নভেম্বর পৃথকীকরণের পর বিচার বিভাগে বিচারক স্বল্পতাসহ ব্যাপক এজলাস সংকট তৈরি হয়েছিল।
‘কিন্তু ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জেলা পর্যায়ে ৮ থেকে ১০ তলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ, পুরাতন জেলা জজ আদালত ভবনগুলোর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার ফলে এখন এজলাস সংকট অনেকটাই দূর হয়েছে। বিগত ১০ বছরে অধস্তন আদালতে ১ হাজার ২৮ জন বিচারক নিয়োগ দেয়ার ফলে বিচারক স্বল্পতার পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে,’ বলেন তিনি।
এছাড়া স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো চালু করে নজিরবিহীনভাবে বিচারকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো, তাদের নিরাপত্তা জোরদার এবং একই সময়ে অধস্তন আদালতের বিচারকদের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহারের জন্য প্রায় চারশ গাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
সম্প্রতি স্বল্পসুদে বিচারকদের গৃহনির্মাণ ঋণ গ্রহণের সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দেশে প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন ও জাপানে গত তিন বছরে ৮২৪ জন বিচারককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং বিচারকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ দুই মাস থেকে চার মাসে উন্নীত করা হয়েছে, যোগ করেন তিনি।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইন সচিব মো. গোলাম সাওয়ার।