রাজধানীর পিলখানা বিডিআর (বিজিবি) সদর দপ্তরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ১৩তম বার্ষিকী শুক্রবার পালিত হচ্ছে।
২০০৯ সালের এই দিনে গণহত্যায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন।
দিবসটি উপলক্ষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কোরআন তেলওয়াত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে।
রাষ্ট্রপতির পক্ষে রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের কবরে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আরও পড়ুন: পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এক যুগ: নানা কর্মসূচিতে শহীদদের স্মরণ
এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, তিন বাহিনীর প্রধান-সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং বিজিবির মহাপরিচালক মো. মেজর জেনারেল মো. শাফিনুল ইসলামও নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এসময় নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যও আত্মীয়রা নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সকল স্থাপনায় বিজিবির পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে এবং সকল বিজিবি সদস্য কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ ও পিলখানার বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন।
আরও পড়ুন: বিজিবির নতুন প্রধান মেজর জেনারেল সাকিল
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সপ্তাহ চলাকালে ২৫ ফেব্রুয়ারি সশস্ত্র বিদ্রোহ করেন বাহিনীর কয়েকশ সদস্য। তাদের হাতে পিলখানা সদরদপ্তরে নিহত হন ৫৭ জন সেনাকর্মর্তাসহ ৭৪ জন।
পরে সরকারের সাথে বিদ্রোহীদের আলোচনা শেষে পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র, গুলি ও গ্রেনেড জমাদানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের সমাপ্তি হয়।
ঘটনার জেরে আধা সামরিক বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) নাম বদলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখা হয়।
হত্যা, লুটপাট ও বিদ্রোহের এ ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে হত্যার এক মামলায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২৭৭ জনকে দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৬২ জনকে তিন মাস থেকে ১৯ বছর করে কারাদণ্ড এবং বিএনপির প্রয়াত নেতা নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীনহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
অন্যদিকে বিদ্রোহের জন্য দায়ের করা ৫৭ মামলায় বিডিআরের মোট পাঁচ হাজার ৯২৬ জন সদস্যের বিভিন্ন মেয়াদে (চার মাস থেকে সাত বছর) কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। রায় প্রদানকারী তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার এ রায়টি প্রকাশ করা হয়।
রায়ের দৈর্ঘ্য এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ রায়।
আরও পড়ুন: জানুয়ারি মাসে ২১১ কোটি টাকার মাদক ও চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি