লালমনিরহাটে পুলিশ হেফাজতে রবিউল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হালিমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে, পুলিশের নির্যাতনে রবিউল ইসলামের মৃত্যু দাবি করে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করেছে জনতা।
মৃত রবিউল ইসলাম খান সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাজিচওড়া গ্রামের দুলাল খানের ছেলে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার নববর্ষ উপলক্ষে মহেন্দ্রনগর বাংলাবাজার এলাকায় মেলা বসায় স্থানীয়রা। মেলাকে ঘিরে রাতে জুয়ার আসর বসলে গোপন খবরে সেখানে অভিযান চালিয়ে রবিউলসহ দু’জনকে আটক করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে পুলিশ হেফাজতে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ
অন্য জুয়াড়িরা পালিয়ে যান। তবে সে সময় রবিউল জুয়া খেলেনি দাবি করে পুলিশভ্যানে উঠতে আপত্তি জানান। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয়। একপর্যায়ে রবিউলকে মারধর ও জোর করে টেনে পুলিশভ্যানে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পথে রবিউল অসুস্থতাবোধ করলে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু রমেকে নেয়ার প্রস্তুতির সময় জরুরি বিভাগেই রবিউলের মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর এ খবরে দিনগত রাতেই মহেন্দ্রনগর বাজারে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে অভিযুক্ত সদর থানার উপপরিদর্শক হালিমের শাস্তি দাবি করেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশভ্যানে হামলা ও ভাংচুর করে অবরোধকারীরা।
একই দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে একই স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে রবিউলের হত্যাকারী পুলিশ সদস্যের কঠোর শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী। অবশেষে অভিযুক্ত এসআইকে দুপুরের দিকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম। ওসি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি নির্দেশনায় এসআই হালিমকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।
লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।