‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদালতে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, বেগম জিয়া কি তা পারতেন’ কিনা এমন প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্দরনগরীতে ৫৬তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকরা বেগম জিয়ার বিদেশ যাওয়ার অনুমতি বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সেই ব্যক্তি যার আমলে তার পুত্রের পরিচালনায় একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছে এবং এরপর তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে হাস্যরস করে বলেছিলেন যে, আমাদের নেত্রী না কি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন।’
ড. হাছান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া সেই ব্যক্তি যার দুয়ারে দেশের প্রধানমন্ত্রী গিয়ে ২০-২৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন তার পুত্রের মৃত্যুতে সমবেদনা জানানোর জন্য, তিনি দরজা খোলেননি। বেগম জিয়া সেই ব্যক্তি যাকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে দাওয়াত দিয়েছিলেন, আর তিনি অশোভন আচরণ করে সেদিন তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবিতে শনিবার বিএনপির গণ-অনশন
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়া সেই মানুষ যিনি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করার জন্য, হত্যাকারীদেরকে উৎসাহ দেয়ার জন্য নিজের জন্মের তারিখ বদলে দিয়ে ১৫ আগস্ট কেক কাটেন, ভুয়া মিথ্যা জন্মদিন পালন করেন। তিনি আদালতে খালাস পাননি, জামিন পাননি। এরপরও বেগম জিয়াকে কারাগারের বাইরে রাখা হয়েছে। তিনি যখন কারাগারেও ছিলেন, তার সাথে তার পছন্দের গৃহপরিচারিকাকে থাকতে দেয়া হয়েছিল, যেটি উপমহাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তার প্রতি যে মহানুভবতা প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, আমি ব্যক্তি হিসেবে কখনো সেটি দেখাতে পারতাম না, অন্য কেউ পারতো না। বেগম খালেদা জিয়া পারতেন কি না সেই প্রশ্নটা করেন।’
এসময় বিএনপি মহাসচিবের ‘সরকার লুটপাট-নৈরাজ্য চালাচ্ছে’ এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ফখরুল সাহেবরা দেশে যে কি পরিমাণ নৈরাজ্য বিভিন্ন সময় চালিয়েছে সেটি তো দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের রাজনীতি, মানুষকে দিনের পর দিন অবরুদ্ধ করে রাখার রাজনীতি, স্কুলছাত্র, বিশ্ব ইস্তেমা ফেরত মুসল্লি, মসজিদের মধ্যে মোয়াজ্জিনের ওপর বোমা নিক্ষেপ, ভিন্নমতালম্বীদের ওপর হামলা এগুলো সবই মির্জা ফখরুল সাহেবরাই করেছেন। আমাদের দল সেই রাজনীতির চর্চা করে না।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া মৃত্যুর সাথে লড়ছেন: ফখরুল
এর আগে বক্তৃতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশের বৃহত্তম ও অনন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় গত ৫৫ বছরের পথচলায় দেশ ও সমাজ গঠন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও গবেষণায় আরও ভূমিকা রেখে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি বিশ্বসভায় ছড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আখতারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল করিম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন। প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: সরকার চাইলেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে: বিএনপি