শরীয়তপুরের সদর উপজেলায় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে হত্যার দায়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের যাবজ্জীবনসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার উপজেলার চিকন্দি সরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছামাদ আজাদ হত্যা মামলায় এ রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. মনির কামাল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নুরুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীর মাতবর, জুলহাস মাতবর ও চান মিয়া। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্লা, আজিজুল মাতবর, ফারুক খান, আজাহার মাতবর, মীজান মীর, আকতার গাজী, জলিল মাতবর, এমদাদ মাতবর ও লাল মিয়া।একই সঙ্গে তাদেরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মা মেয়ে হত্যা: আসামি শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন আজিবর বালী, আব্দুল খন্দকার, খোকন বেপারী, আজাহার মোল্লা ও ছোরাব মোল্লা।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছামাদ আজাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লার কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। পরের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি এলাকায় পোস্টারিং করছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হুমকি দেন হালিম মোল্লা।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিক্ষক ছামাদ আজাদ শরীয়তপুরের সন্তোষপুর বাসস্ট্যান্ডের লক্ষ্মীর মোড়ের একটি দোকান থেকে বের হয়ে রাস্তার ওপর আসার পরই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছামাদকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে গুলিবিদ্ধ হন রহিম পেদা, ওয়াজেদ শীল, সেলিম ফকির, ইসাহাক মুন্সী ও বিশ্বজিৎ শীল।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় আলোচিত ফোর মার্ডার মামলার একমাত্র আসামির মৃত্যুদণ্ড
এ ঘটনায় তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লা ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিবর বালীসহ ৩০ জনের নামে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও প্রায় ২০ জনের বিরুদ্ধে পালং থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী।
একই বছরের ১৪ আগস্ট পালং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। তবে অভিযোগপত্রে নারাজি দেন মামলার বাদী। পরে ২০১১ সালের ১১ মে একই থানার এসআই সুলতান মাহমুদ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
২০১৪ সালে বিচারের জন্য মামলাটি শরীয়তপুরের জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ আদালতে যায়।সেখানে ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।
পরে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে স্ত্রী সন্তানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড
ওই বছরের ২১ জুন মামলার নথি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। এরপর একই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।