চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে বাসায় ঢুকে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক কিশোরী ও তার মাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আসামি মো. শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। আরেক আসামি আবু রায়হান মারা যাওয়ায় তার বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি আদালত। আসামির আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন অর রশিদ, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শহিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় আলোচিত ফোর মার্ডার মামলার একমাত্র আসামির মৃত্যুদণ্ড
পরে সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো সাংবাদিকদের বলেন, আসামি শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত। নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি আবু রায়হান মারা যাওয়ায় আদালত তার বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি।
২০১৪ সালের ২৪ মার্চ আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার ১৭ নম্বর রোডের ১২৯ নম্বর বাড়ি ‘পদ্মা-যমুনা’য় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রেজাউল করিমের স্ত্রী রেজিয়া খাতুন (৪৯) ও তার মেয়ে সাইমা আক্তারকে (১৭) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর পুলিশ ওই বাসা থেকে রক্তমাখা একটি ছোরা, জিন্সের প্যান্ট, শার্ট, একটি ব্যাগে থাকা দুই বোতল পেট্রোল, সাতটি মোবাইল সিম, টেঁটা ও তোয়ালে উদ্ধার করে। নিহত রেজিয়া খাতুনের স্বামী রেজাউল করিম ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করলে ঘটনার পরদিন গোয়েন্দা পুলিশ খুলশী থেকে শহীদ এবং ঢাকার ফকিরাপুলের একটি আবাসিক হোটেল থেকে রায়হানকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে স্ত্রী সন্তানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড
তদন্ত শেষে গত বছরের ২৫ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ৮ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর দুই আসামির ফাঁসির রায় দেন আদালত। চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিতুল হক এনাম চৌধুরী চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। আসামিরা হলেন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের হাবিলদার আবুল বাশারের ছেলে আবু রায়হান (২৭) ও নগরীর খুলশী এলাকার একটি রেস্টহাউসের গাড়ি চালক মো. শহীদ।
আরও পড়ুন: সিলেটে ২ নারীকে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড
বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। এছাড়া আসামিরা মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল দায়ের করেন। জেল আপিল দায়েরের পর আসামি আবু রায়হান মারা যান।