প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশের জনগণকে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে হবে।
রবিবার সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদেরই প্রয়োজন।’
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা (আবার ক্ষমতায়)না এলে কে বাস্তবায়ন করতে পারবে? আমাকে এমন একজন ব্যক্তি দেখান যিনি এটি করতে সক্ষম হবেন। আমাকে এমন একজন লোক দেখান যে দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে। আপনি যদি আমাকে এমন নেতৃত্ব দেখাতে পারেন, আমার কোনো আপত্তি নেই।’
দেশের জনগণের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে উন্নয়নের পথে আনতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের পদক্ষেপে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে পারে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, তার সরকার দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সক্ষম হয়েছে। আজ বেকারত্বের হার মাত্র ৩ শতাংশ।
গত ১ জুন সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রতিবন্ধকতা, প্রতিরোধ ও সমালোচনার মধ্যেও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশ তার উন্নয়নের যাত্রায় অনেক এগিয়ে যেতে পারত।
তিনি অবশ্য বলেন, ভয়ের কিছু নেই, কারণ সময়ে সময়ে সমস্যা আসাটাই স্বাভাবিক।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমস্যা দেখে মন খারাপ করবেন না। বরং এর মুখোমুখি হতে হবে। আমরা অনেক কথা শুনি যে সরকার আজকে উৎখাত হবে এবং আগামীকাল অন্যান্য কিছু করা হবে।’
বাজেটের সমালোচকদের তিরস্কার করে তিনি বলেন, অনেকেই এই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বা অবাস্তবায়নযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন। ‘আমরা সবসময় এই ধরনের কথা শুনি।’
তিনি বলেন, কিছু লোক আছে যারা সবসময় নেতিবাচক মনোভাব দেখায় এবং তারা ইতিবাচক কিছুই দেখে না, যা দেশের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমালোচকরা হয়তো কখনোই গ্রামীণ এলাকায় যাননি যেখানে শহরের তুলনায় দারিদ্র্যের হার অনেকাংশে কমেছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রামীণ জনগণের মধ্যে এমন কোনো দুর্ভোগ নেই।
তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছর ধরে দেশে স্থিতিশীলতা বিরাজ করায় বাংলাদেশ ব্যাপক অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি যোগ করেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরের কারণে বিশ্বজুড়ে কঠিন সময়ের মধ্যে সরকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার রেকর্ড বাজেট রাখতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস করবে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশের অর্থনীতি যখন সংগ্রাম করছে, তখন আমরা এই বিশাল বাজেট দিতে পেরেছি।
বাজেট ঘাটতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রতি বছর বাজেট ঘাটতি ৫ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশের মধ্যে রাখে।
তিনি বলেন, ‘এবার বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে রাখা হয়েছে। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
বাজেটে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তিনি বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব।
আগামী ২০২৩-৩৪ অর্থবছরের মধ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
সরকারি কর্মচারীরা বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে ৫ শতাংশ বেসিক পাবেন:
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমি অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি এই জরুরি সময়ে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ বেতন হিসেবে দেওয়ার কথা বিবেচনা করুন। আশা করি অর্থমন্ত্রী বিষয়টি মেনে নেবেন। আমরা তাদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ প্রদান করব। বিশেষ প্রণোদনা।’
প্রধানমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন খাতে তার সরকারের উন্নয়ন সাফল্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: আ. লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্যের উন্নতি হয়: শেখ হাসিনা