ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে দেশটির অলভিয়া বন্দরে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলায় একজন নাবিক নিহত হওয়ার পর জাহাজটিতে থাকা বাকি ২৮ জন নাবিক তাদের নিরাপদে উদ্ধারের আকুতি জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে উদ্ধারের আকুতি জানিয়েছেন নাবিকরা।
এর আগে বাংলাদেশ সময় বুধবার (২ মার্চ) রাত ৯টা ২৫ মিনিটে অলভিয়া বন্দরে অবস্থান করা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। জাহাজে থাকা নাবিকরা সবাই মিলে আগুন নেভায়। হামলায় জাহাজটির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমান আরিফ মারা যান।
এর পরপরই জাহাজে থাকা নাবিকরা ভিডিও বার্তায় তাদের নিরাপদে উদ্ধারে আকুতি জানায়।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলা, নিহত এক নাবিক
রবিউল আলম নামে জাহাজের এক নাবিক ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি বাংলার সমৃদ্ধির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। আমাদের জাহাজে রকেট হামলা হয়েছে। একজন অলরেডি ডেড। আমাদের পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি জেনারেটরে পাওয়ার সাপ্লাই চলছে। আমরা মৃত্যুর মুখে সম্মুখীন।’
‘আমাদের এখনো উদ্ধার করা হয়নি। দয়া করে আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সবাই আছি এখানে। দেখেন।...আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি। আমাদের বাঁচান।’
আসিফুল ইসলাম নামে নাবিক দলের এক সদস্য একটি ভিডিওর মাধ্যমে তাদের উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে বলেন, তারা নিরাপদ স্থানে যাওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনীয় বন্দরে আটকা পড়েছেন ২৯ বাংলাদেশি নাবিক
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে জাহাজটি আটকা পড়ে দেশটির অলিভিয়া বন্দরে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে যায় 'এমভি বাংলার সমৃদ্ধি'। সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে ইতালির র্যাভেনা বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল জাহাজটির। জাহাজে ২ নারীসহ বাংলাদেশের ২৯ জন নাবিক ছিল। বর্তমানে ২৮ জন নাবিক অক্ষত রয়েছেন। বন্দরটিতে বিভিন্ন দেশের আরও প্রায় ২০টি জাহাজ আটকে আছে বলে জানা গেছে।
এদিকে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি)র নির্বাহী পরিচালক পীযুষ দত্ত বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে আটকা পড়া ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে বুধবার রকেট হামলার পর ২৮ জন নাবিক-ক্রু বর্তমানে জাহাজেই অবস্থান করছেন। তাদের নিরাপদে উদ্ধার করতে এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। তবে জাহাজের সবাই অক্ষত ও সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ভারতীয় শিক্ষার্থী জিম্মির খবর অস্বীকার নয়াদিল্লির