তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আসলে তারা (বিএনপি) যে কাজগুলো করেছে এবং করছে এগুলো রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কাজ। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এ বিষয়ে তদন্ত করে তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।’
বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে তাদের খরচের হিসাব দিতে হয়। এখানে যে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের জন্য, তারা এই হিসাব নির্বাচন কমিশনে দিয়েছে কি না। সেটি নির্বাচন কমিশন নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, কী করবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের লেখা দুটি চিঠি গণমাধ্যমের সামনে পড়ে শোনান। এই চিঠি দুটির একটি লেখা হয়েছে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল ও অন্যটি ২৪ এপ্রিল। এছাড়া বিএনপির পক্ষে বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে দলটির নেতারা যে চুক্তি করেছেন তার নথিও তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশের ওপর ব্যবস্থা, এমনকি নিষেধাজ্ঞা দিতে বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আসা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় তিনি দাবি করেন, ‘একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি আজ আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই সরকার।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সুস্থতাই প্রমাণ করে বিএনপি মিথ্যাচার করে: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে, সে পদক্ষেপের দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়।’
তবে সেই প্রবাসীর উদ্যোগে বিএনপির সমর্থন আছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
লবিস্ট নিয়োগের কথা অস্বীকার করলেও চিঠি লেখার কথা স্বীকার করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘বিদেশে লেখা আমার ওই চিঠিগুলো কোনো লবিস্ট নিয়োগের বিষয় নয়, মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান মাত্র।’
এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে তিনি (মির্জা ফখরুল) আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন।’
চিঠির বক্তব্য তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তার কথার সারমর্ম হচ্ছে বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করা। উনি গতকাল বলেছেন, তিনি সাহায্যের কোনো কথা বলেন নি। এখানে সাহায্য পূনর্মূল্যায়ন ও প্রকারান্তরে সাহায্য বন্ধের আহ্বান তিনি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব এই নথিগুলো কিভাবে অস্বীকার করবেন?
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে যারা এভাবে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশকে বিব্রত করার জন্য এবং রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য, তাদের আসলে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিৎ নয়।’
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা যে প্রচন্ড মিথ্যাচার করেন এটির প্রমাণ হলো এই নথিগুলো। দে আর অল লায়ার্স। তারা দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ এই নথিগুলো।’
আরও পড়ুন: রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েও মিথ্যাচার করেছে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে মিথ্যাচার করেছে ক্রমাগতভাবে গতকাল খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় তা প্রমাণিত হয়েছে। অর্থাৎ তাদের পুরো রাজনীতিটাই মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত।