ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন। তিনি জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ নিয়ে আসছেন।
বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জয়শঙ্করের এই সফরকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় উচ্চ-পর্যায়ের সফর এবং সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে।
দুই দেশই কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপন করছে।
২০২১ সালের মার্চ মাসে জয়শঙ্কর সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
সংক্ষিপ্ত সরকারি সফরে তিনি বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গেও আলোচনা করবেন বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
মোমেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
জয়শঙ্কর ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে দুপুর আড়াইটায় বিএএফ ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে অবতরণের কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সফর শেষে তিনি ভুটানে যাবেন।
আরও পড়ুন: জয়শঙ্কর সুখবর নিয়ে আসতে পারেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কী সুখবর?
বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর সুখবর নিয়ে আসতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘তিনি আসছেন এটা ভালো খবর। হতে পারে তিনি সুখবর নিয়ে আসবেন এবং আমরা এখনও জানি না যে সেই খবরটি ঠিক কী।’
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক খুবই মধুর এবং এতে তারা খুবই খুশি। জয়শঙ্কর বাংলাদেশে আসছেন। ‘আমরা সবসময় তাকে স্বাগত জানাই। তিনি আমাদের সারপ্রাইজ দেবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরের জন্য জয়শঙ্কর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ নিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরটি সম্ভবত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে হতে পারে। একটি কূটনৈতিক সূত্র রবিবার ইউএনবিকে এমন তথ্য জানায়।
শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপনে যোগ দিতে ২০২১ সালের ২৬ থেকে ২৭ মার্চ বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করেন।
এছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ গত বছরের ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর ৫০তম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে যোগ দিতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করেন।
এটি ছিল ভারতীয় রাষ্ট্রপতির প্রথম বাংলাদেশ সফর এবং কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর তার প্রথম বিদেশ সফর।
এই সফরগুলো ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্ধশতাব্দীর অংশীদারিত্বের প্রতীক যা সমগ্র অঞ্চলের জন্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মডেল হিসেবে শক্তিশালী, পরিপক্ক ও বিকশিত হয়েছে।
ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে আরও গতিশীল করার প্রয়াসে বর্তমানে দুই প্রতিবেশী দেশ এই বছর শেখ হাসিনার ভারত সফরের প্রস্তুতিসহ সম্পৃক্ততা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে দিল্লির সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক
প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে, জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) পরবর্তী দফার বৈঠকটি সম্ভবত আগামী মাসে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এবং ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর এই জেসিসির সহ-সভাপতিত্ব করবেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের সময় এই বৈঠকের তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোমেন বলেন, জেসিসির আগে কিছু বৈঠক করা দরকার।
আগামী জেসিসি বৈঠকে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ অমীমাংসিত সব বিষয় উত্থাপন করবে।
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন ও সীমান্ত হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সব সময়ই এসব ইস্যু তুলেছে এবং তা পুনরাবৃত্তি করবে।
২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জেসিসি’র ষষ্ঠ সভা অনুষ্ঠিত হয়। যদিও ঢাকায় এই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে সভাটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে: শ্রীংলা