ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ এক কলেজছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের তিন কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত ইসতিয়াক আহমেদ ইকরাম (২২) সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের চান্দিয়ারা গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে এবং পৌর ডিগ্রি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
আটকেরা হলেন-হাসপাতালের মালিকের ভাই এমদাদুল বশির জয়, হাসপাতালের স্টাফ নাজমুল হক এবং আরিফুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ১৪৮ মণ সরকারি চাল জব্দ, আটক ১
স্বজনেরা জানায়, নাকের পলিপাসের সমস্যা নিয়ে শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন জেলরোডের আল-খলিল হাসপাতালে ভর্তি হন ইশতিয়াক। ওই হাসপাতালে ঢাকা থেকে আসা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. রাফিউল আলম অ্যানেস্থিসিয়া চিকিৎসক ফৌজিয়া মমতাজ সুপ্তীর তত্ত্বাবধানে তার নাকের পলিপাস অপারেশন করা হয়। এরপর তাকে অচেতন অবস্থায় তাকে বেডে দেয়া হয়। এ সময় রোগীর করুণ অবস্থা দেখে পরিবারের লোকজন চিৎকার শুরু করে। রোগীর জ্ঞান না ফেরায় হাসপাতালের লোকজন পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ইকরামকে শহরের আইসিইউ স্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে পালিয়ে যায়। সেখানে শনিবার সকালে অচেতন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ইশতিয়াকের চাচা শিক্ষানবিশ অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তার অপারেশন করেছেন ডা. রাফিউল আলম।। কিন্তু রাফিউল দাবি করেছেন যে তিনি অপাশেন করেননি। ইশতিয়াকের সঠিক চিকিৎসা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।’
আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়ডাগনস্টিক সেন্টারের মালিক মো. মানিক বলেন, ‘হাসপাতালে কোনও ভুল চিকিৎসা হয়নি। অপারেশন করেছেন ডা. রাফিউল আলম হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা আছে, সব ভিডিও আছে।’
এ ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পেয়েছি।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাচ্চু মিয়া একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এতে আল-খলিল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান খলিলুর বশির মানিক, হাসপাতালের সার্জন ডাক্তার মো. রাফিউল আলম ও অ্যানেস্থিসিয়া চিকিৎসক ফৌজিয়া মমতাজ সুপ্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।