জো বাইডেনকে পাঠানো এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, আমি আপনার সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ, হিংস্র উগ্রবাদ, বিদ্বেষ, রোহিঙ্গাদের মতো জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতকরণের মতো ঘটনা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা এবং কার্যকর ও উন্নত বিশ্ব তৈরিতে কাজ করতে চাই।’
গত ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন জয়ী হওয়ায় তাকে বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের পক্ষে এবং তার পক্ষে আন্তরিক অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-২০২০ জয়ী ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনীত প্রার্থী জো বাইডেন আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আপনার দুর্দান্ত এ জয়ের মধ্যে দিয়ে আপনার দেশের জনগণের কল্যাণে গত চার দশক ধরে তাদের প্রতি আপনার নিষ্ঠা ও প্রমাণিত অসাধারণ নেতৃত্বের গভীরতম প্রতিফলন ঘটেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আামি আরও বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকে শান্তির নতুন যুগে পৌঁছানের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দিবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় সমৃদ্ধি অর্জনে ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রেও দৃঢ় ভূমিকা রাখবে।’
১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ এক দুর্দান্ত ও টেকসই সম্পর্ক তৈরি করেছে।
‘দেশটির শীর্ষস্থানে আপনি (জো বাইডেন) থাকায় এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে উচ্চতর উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আমার মনে হচ্ছে,’ বলেন শেখ হাসিনা।
জো বাইডেন এবং দেশটির ফার্স্ট লেডি ড. জিল বাইডেনকে বাংলাদেশে আসার জন্য আমন্ত্রণও জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ তার নিজের প্রচেষ্টা, জনগণের সামর্থ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো বন্ধু রাষ্ট্রের সমর্থন পেয়ে দেশের সামগ্রিক যে অগ্রগতি হয়েছে, তা পরিদর্শন ও জানার জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাইডেন ও তার পরিবারের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সুখ কামনা করেন এবং বন্ধুবৎসল দেশের মানুষের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
দেশটির নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্টকে পাঠানো পৃথক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমবারের মতো একজন নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য এক বিশেষ গর্বের বিষয়।
তিনি বলেন, ‘এ জয় অবশ্যই আপনার প্রশংসিত নেতৃত্ব, জনসেবা খাতে রাখা অসাধারণ কৃতিত্ব এবং মহান দেশ ও জনগণের প্রতি রাখা আপনার মূল্যবান অবদানের স্বীকৃতি দেয়।’
‘আমি বিশ্বাস করি আপনার মেয়াদকালে মানুষের জন্য সমান অধিকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আপনার নিরলস প্রচেষ্টা ও সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। সেইসাথে যুক্তরাষ্ট্র ও সারা বিশ্বের লিঙ্গ সমতা, নারীদের আশা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে শক্তি ও চালিত করার সাক্ষী হয়ে থাকবে,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক দীর্ঘ সময়ে এক স্থায়ী, উৎপাদনশীল অংশীদারিত্বের বিকাশ ও গভীর হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এখন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনার নেতৃত্ব, অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞার প্রতিফলনে আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক ঈর্ষণীয় উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং তার স্বামী ডগলাস এমফোফকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং নারী ক্ষমতায়নের অসাধারণ বিষয়টি দেখার জন্য এ আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনার ও আপনার পরিবারের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘয়ু ও সুখ এবং বন্ধুভাবাপন্ন যুক্তরাষ্ট্রে জনগণের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।’