‘আমি আশা করি পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ বাহিনী জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজশাহীর সারদা বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৭তম বিসিএসের (পুলিশ ক্যাডার) প্রশিক্ষণ সমাপ্তির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে জনগণের শান্তি ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন: জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে পাশে দাঁড়ান: সেনাবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী
‘মনে রাখবেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, জনগণের সেবা করা এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা আমাদের বেশি প্রয়োজন,’ তিনি বলেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি পুলিশ সদস্যদের জনগণের আস্থা, বিশ্বাস এবং ভালোবাসা অর্জন করতে বলেন।
‘এবং যদি আপনি জনগণের ভালোবাসা, আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন তবে পুলিশ বাহিনীর সংখ্যা কোনো বিষয় নয়। জনগণের সহায়তায় যে কোনো ধরনের অপরাধ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। আপনাদেরকে সেভাবে প্রস্তুত হতে হবে এবং আমরা তাই চাই,’ তিনি বলেন।
সাইবার অপরাধের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার কথা বলতে গিয়ে তিনি পুলিশ বাহিনীকে তা দমন করতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অর্থ পাচার, সাইবার অপরাধ ও মানব পাচার বৈশ্বিক সমস্যা এবং এগুলো থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনী সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
তিনি পুলিশ সদস্যদের বলেন, ‘এগুলো আরও দক্ষতার সাথে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।’
আরও পড়ুন: সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক সরঞ্জাম দেয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী
বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতে সরকারি বাসায় থাকতেই হবে: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বাহিনীর সদস্যদের চিকিত্সার জন্য পৃথক মেডিকেল ইউনিট প্রতিষ্ঠার উপর জোর দেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সরকার ঢাকার বাইরে বিশেষত বিভাগীয় সদর দপ্তরে পুলিশ হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন ও উন্নত করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।
২০০৯ সাল থেকে পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে এই বাহিনীর জন্য বাজেট ছিল ৩ হাজার কোটি টাকা, তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে এটি বাড়িয়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দমন করতে সরকার বিভিন্ন ধরনের ইউনিট গঠন করেছে যেমন পুলিশ তদন্ত ব্যুরো, পর্যটন পুলিশ, বিশেষ নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যাটালিয়ন, শিল্প পুলিশ, মহিলা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য দুটি পৃথক আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন করতে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট (এটিইউ) এবং কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) গঠন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন ও পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বক্তব্য প্রদান করেন।
এর আগে আসাদুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ভালো ফলাফলের জন্য ক্যাডেটদের মাঝে বিভিন্ন পুরস্কার বিতরণ করেন।