আগামীতে কেউ যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আর বিকৃত করতে না পারে সেজন্য জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণকে চেতনায় জাগ্রত করতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দেশকে গড়ে তুলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে অর্জিত চেতনাকে যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ বিকৃত করতে না পারে সেজন্য সবাই সজাগ থাকুন।’
শাহবাগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের নির্বাচিত চিত্রকর্ম নিয়ে “এ রেট্রোস্পেকটিভ ১৭৯৭৩-২০২৩” শীর্ষক বিশেষ শিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব বলেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে মাসব্যাপী একক শিল্প প্রদর্শনীতে শাহাবুদ্দিনের ১৪০টি নির্বাচিত শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সবার জন্য সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন: জি২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা বলেন, চিত্রকর্ম মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে। তিনি বলেন, ‘শিল্পকর্মগুলো মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম ও চেতনা জাগ্রত করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আদর্শ ও ইতিহাস- সবকিছুই মুছে যাওয়ার পর কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও লেখকরা তাদের রচনায় চেতনা ধরে রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু তারা সে সময় চেতনা ধরে রেখেছিলেন, তাই আমরা, রাজনীতিবিদরা, পরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং রাজনৈতিক উপায়ে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছি। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশ গড়ার পদক্ষেপ নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরতে শুরু করেছে, যা একটি বড় অর্জন।
মাসব্যাপী প্রদর্শনীর সফলতা কামনা করে তিনি বলেন, শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ তার শিল্পকর্ম বাংলাদেশের প্রকৃতি, দেশের মানুষের অবস্থা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিফলিত করে।
তিনি আরও বলেন, ‘শাহাবুদ্দিন একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন । এখনো তার শিল্পকর্মগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা ও চেতনা প্রতিফলিত হয়। এটি আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করে। তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, এখনও সেই অনুভূতি বহন করেন।’
প্রদর্শনী পরিদর্শনে এসে জনগণ দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
শাহাবুদ্দিন আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ তিনি তার চিত্রকর্মের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী “শাহাবুদ্দিন, এ রেট্রোস্পেকটিভ ১৯৭৩-২০২৩” শিরোনামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
প্রধানমন্ত্রী ফিতা কেটে রেট্রোস্পেকটিভের উদ্বোধন করেন এবং প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত শাহাবুদ্দিনের একক চিত্রকর্ম পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপু, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক খলিল আহমেদ এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান।
আরও পড়ুন: আপনার অর্জন খুবই আকর্ষনীয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বাইডেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মধ্যে আলোচনা চলছে