‘ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ বড়- এটাই হচ্ছে রাজনীতির মূল আদর্শ। কিন্তু আজকাল যেন রাজনীতি উল্টো পথে হাঁটছে,’ বলেন তিনি।
প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী বিশেষ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাষ্ট্রপতি স্বাগত বক্তব্য দেন।
রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকীর এই দিনে রাজনীতিবিদদের বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত করার আহ্বান জানান।
‘রাজনীতি আর পেশা এক জিনিস নয়। পেশার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিজের ও পরিবার-পরিজনের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। আর রাজনীতি হচ্ছে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার একটি মহান ক্ষেত্র। তাই রাজনীতিকে পেশা মনে করলে দেশ ও জনগণের কথা ভুলে নিজের ও পরিবারের গণ্ডির মধ্যেই ঘুরপাক খেতে হবে,’ বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু চাইলেই অবিভক্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মহাসুখে দিন কাটাতে পারতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বা ভোগ-বিলাস কোনো কিছুই তাকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: পিএসসির মাধ্যমে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নিতে বললেন রাষ্ট্রপতি
‘বিত্ত-বৈভবে নিজেকে উজাড় করে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি অবলীলায় এসব প্রত্যাখ্যান করে দেশ ও জনগণের অর্থাৎ বাঙালি ও বাংলাদেশের স্বার্থকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন,’ বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, বলেন তিনি।
দেশের বর্তমান উন্নয়নের প্রশংসা করে হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ অর্জন করেছে। আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে নিমার্ণাধীন পদ্মাসেতু এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। বাস্তবায়িত হচ্ছে মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্প।’
‘টেকসই উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, ইনশা আল্লাহ,’ বলেন তিনি।
শতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার অমূল্য স্মৃতি ও স্মারক সংরক্ষণ করার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম বাঙালি জাতির গৌরব এবং পূর্বসূরীদের অসীম সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের অনন্য গাঁথা জানতে পারে এবং সেই আলোকে নিজেদের আলোকিত করতে পারে।
মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্ সম্মানিত অতিথি হিসেব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভাচুয়ালি শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মন মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্যের সাক্ষাত
ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ
মালদ্বীপের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ নিতে পারে: রাষ্ট্রপতি