প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে দেশের অর্থ প্রদানের ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙার এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বল প্রবৃদ্ধি, সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন, জ্বালানি, গ্যাসও খাদ্য সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, ভোক্তা পণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও আন্তর্জাতিক মালবাহী খরচ বৃদ্ধি, রপ্তানি বন্ধ, রেমিট্যান্স কম আহরণসহ নানা কারণে বাংলাদেশের অর্থপ্রদানে ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সংসদ নেত্রী হাসিনা আরও বলেন, গত চৌদ্দ বছরে ঋণ ও বাজেট ঘাটতি উভয়কে টেকসই ও সহনশীল করে তার সরকার উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
পড়ুন: জনগণের কল্যাণে কাজ করুন: সরকারি কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, করোনা মহামারিসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা সমস্যার মধ্যেও বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশ ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে।
ঋণ ও জিডিপি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের শেষে ঋণ ও জিডিপির হার ৩৪ শতাংশ রাখা যা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের স্বীকৃত ঋণের সীমার অনেক নিচে।
তিনি এসময় বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবিলায় তার সরকারের পদক্ষেপগুলোকে তুলে ধরেন।
জাতীয় পার্টির ঢাকার আরেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসাইন এর প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাহিদার আলোকে যে পরিমাণ
বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আছে সে হিসাবে দেশে কোন বিদ্যুৎ সংকট নেই।
পড়ুন: আ.লীগ নেতা নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
তিনি অবশ্য বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ে মিতব্যয়িতা, পরিকল্পিত লোডশেডিং –এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে চলমান সসম্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকার ১০০০-২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোডশেডিং দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সহনশীল মাত্রায় লোডশেডিং দিচ্ছে।’
তিনি অবশ্য আশা করছেন যে অল্প কিছুদিন পরই বর্তমান বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধ করা যাবে।
পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া শুরু হলে ও বিদ্যুৎ ব্যয়ে মিতব্যয়ীতা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে উন্নতির আশা করা যায়।
নাটোরের ক্ষমতাসীন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম শহিদুল ইসলাম বকুলের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন বর্তমানে দেশে ৭ দশমিক শূণ্য এক মেট্রিক টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেল আছে যা দিয়ে ৩০-৩৫ দিন চলবে।
তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে দেশে নিরবিচ্ছিন্ন তেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে আরও দুটি তেলের ট্যাংকার দেশে পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, আগামী ছয়মাসের জন্য (জুলাই-ডিসেম্বর)দেশের চাহিদার আলোকে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোকে আমদানি আদেশ দেয়া আছে ।
সংসদীয় বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫২১জন নারীসহ দেশের ৬ হাজার ৮৩৬ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের জাতিসংঘের অধীনে ৮টি মিশনে নিয়োজিত রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিশনে দায়িত্ব পালনকালে মোট ১৬১ জন নিহত ও ২৫৮ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার মতো সংকট বাংলাদেশে হবে না: প্রধানমন্ত্রী