সরকার রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ মেট্রিকটন গম এবং ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে তিন লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করবে।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্তিপরিষদের কমিটি এই প্রস্তাবনাসহ আরও কয়েকটিতে অনুমোদন দেয়।
খাদ্যমন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, রাশিয়া থেকে মোট দুই হাজার ৪২ দশমিক ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাশিয়া থেকে এই গম আমদানি করা হবে।
রাশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী পুরো আমদানি প্রক্রিয়ায় খরচ হবে ২১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে রাশিয়া থেকে আমদানি ব্যয় মেটাতে ডলারের বিকল্প মুদ্রা রুবল ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল বারিক সাংবাদিকদের জানান, মন্ত্রিপরিষদের গৃহীত সিদ্ধান্ত হলো ডলারে এই আমদানি ব্যয় মেটানো হবে। বিকল্প কোন মুদ্রা নেই যা এই ক্রয়ে ব্যবহার করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, ক্রয় প্রস্তাবনায় রাশিয়ার কোন বন্দর ব্যবহার করে আমদানি করা হবে তা উল্লেখ করা হয়নি।
প্রতি মেট্রিক টন রাশিয়ার গমের মূল্য পড়বে ৪৩০ মার্কিন ডলার (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা হারে) যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতি কেজি ৪০ দশমিক ৮৫ পয়সা।
খাদ্যমন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ৪১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভারত থেকে এক লাখ মেট্রিক টন অবাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানি করা হবে।
এই আমদানিটি দুটি ভাগে সম্পন্ন হবে। এরমধ্যে ৭০ হাজার মেট্রিকটন চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এবং বাকী ৩০ হাজার মেট্রিকটন স্থলপথে আমদানি করা হবে।
বন্দর দিয়ে আমদানিতে প্রতিকেজি চালের মূল্য পড়বে ৪২ দশমিক ১৩ টাকা আর স্থলপথে পড়বে ৪০ দশমিক ৭০ টাকা। প্রতি মেট্রিকটন চালের মূল্য পড়বে ৪৩৩ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
পড়ুন: চাল-গমের দাম নির্ধারণ করে দেবে সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
আরেকটি আমদানি প্রস্তাবনার আওতায় ভিয়েতনাম থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার মেট্রিকটন অবাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানি করবে খাদ্যমন্ত্রণালয়। এরমধ্যে দুই লাখ মেট্রিকটন অবাসমতি চাল ও ৩০ হাজার মেট্রিকটন আতপ চাল।
এতে প্রতিকেজি সিদ্ধ চালের মূল্য পড়বে ৪৯ দশমিক ৪৯ টাকা আর আতপ চাল ৪৬ দশমিক ৯৩ টাকা।
একটি ভারতীয় কোম্পানি ভিয়েতনাম থেকে প্রতি মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ৫২১ মার্কিন ডলার ও আতপ চাল ৪৯৪ মার্কিন ডলার মূল্যে সরবরাহ করবে।
একই সঙ্গে এমওপি এবং ইউরিয়া সার আমদানির অনমোদন দেয় ক্রয় কমিটি।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৯৩১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনার আওতায় বাংলাদেশি এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন(বিএডিসি) দুবাই ফ্যালকো জেনারেল ট্রেডিং থেকে এক লাখ মেট্রিকটন এমওপি সার আমদানি করবে।
এতে প্রতি মেট্রিকটন এমওপি’র মূল্য পড়বে ৯৮০ মার্কিন ডলার যা আগের আমদানিতে পড়েছিলে এক হাজার ১০০ মার্কিন ডলার।
এছাড়া সৌদি ভিত্তিক সাবিক এগ্রি নিউট্রিয়েন্ট কোম্পানি থেকে ৬০ হাজার মেট্রিকটন ইউরিয়া সার দুটি লটে আমদানি করা হবে।
এই প্রস্তাবনার আওতায় বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন(বিসিআইসি) ৩০ হাজার মেট্রিকটনের প্রতি লট ১১৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আমদানি করবে।
প্রতি মেট্রিকটন ইউরিয়া আমদানিতে খরচ হবে ৬২৪ দশমিক ১৭ মার্কিন ডলার যা আগে একই পরিমাণ আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৫৩৪ দশমিক ৩৩ মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: চালের সরবরাহ বাড়াতে আমদানি শুল্ক আরও কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত: খাদ্যমন্ত্রী