পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার রাজনৈতিক মূল্য রয়েছে এবং এটি একটি নির্দিষ্ট দেশের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) একটি অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এটি আমাদের জন্য একটি দুর্দান্ত দিন। আমরা খুব খুশি। যেসব দেশ রাশিয়া ও চীনের মতো বাধা সৃষ্টি করেছে তারাও রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান চায় এবং রাশিয়ার সাথে তার আলোচনা হয়েছে, চীন কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক আর ভারতের জন্য লজ্জা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. মোমেন বলেন, ভালো ভবিষ্যতের জন্য তাদের (রোহিঙ্গাদের) দেশে ফিরে যেতে হবে। সব দেশই রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।
রোহিঙ্গা সংকট সংক্রান্ত মৌলিক বিষয়গুলো জুনের প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় বাংলাদেশ সেখানে অনুপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলাম যে কেন আমরা সে সময় অংশগ্রহণ করিনি। মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা তুলে ধরা হলেও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের কথা বলা হয়নি। আমরা বলেছি রোহিঙ্গাদের নিয়ে কথা না বললে প্রস্তাব অর্থহীন হয়ে যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব বাধ্যতামূলক নয় এবং নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বাধ্যতামূলক। আমরা এখনও ইউএনএসসি দ্বারা পাশ করা কোনো প্রস্তাব দেখতে পাচ্ছি না। আমরা আশাবাদী যে ভবিষ্যতে আমরা সেখানেও অগ্রগতি দেখতে পাব।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সঙ্কটে ফ্রান্স বাংলাদেশের পাশে থাকবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো রোহিঙ্গা রেজুলেশন, যা এই সঙ্কটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন।
প্রস্তাবটিতে প্রাথমিকভাবে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির প্রেক্ষাপটের মতো বিষয়গুলোর প্রতি।রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, বাংলাদেশের সাথে স্বাক্ষরিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সকল মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে এবারের রেজুলেশনে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরূপণ প্রক্রিয়ার উপর রেজুলেশনটিতে সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে।