জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা বলেছেন, তার দেশ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেয়া অব্যাহত রাখবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধানে জাপানের আরও সম্পৃক্ততা চাইলে তিনি এ আশ্বাস দেন।
সোমবার জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা ও ভাসানচরে স্বেচ্ছায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরসহ এ পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপের বিষয় তুলে ধরে।
মন্ত্রী হায়াশি ইউক্রেন, উত্তর কোরিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিকের পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের বোঝাপড়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেবে সরকার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় ও যুদ্ধবিরোধী দেশ।
তিনি বলেন, ‘ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া বা লিবিয়া যেখানেই যুদ্ধ হোক সেখানে জানমালের ক্ষতি হয় যা আমরা ইউক্রেনে প্রত্যক্ষ করছি। বাংলাদেশ মানবিকতার ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং ইউক্রেনে মানবিক প্রবেশাধিকারের পদক্ষেপ সমর্থন করেছে।’
মোমেন কয়েক ঘণ্টা টোকিওতে ট্রানজিটে ছিলেন এবং ১১ থেকে ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মহাসাগর সম্মেলনে অংশ নিতে সোমবার বিকালে পালাউয়ের উদ্দেশে রওনা হন।
টোকিও থেকে প্রাপ্ত এক বার্তা অনুসারে, ২০২১ সালের নভেম্বরে মন্ত্রী হায়াশি দায়িত্ব নেন। তার দায়িত্ব নেয়ার পর ঘন্টাব্যাপী এ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি ছিল তাদের প্রথম আনুষ্ঠানিক সভা।
বাংলাদেশে জাপান একটি বহুল পরিচিত নাম এবং বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন অংশীদার উল্লেখ করে মোমেন বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বিশেষ করে সমুদ্র অর্থনীতি, অটোমোবাইলস, আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইলেকট্রনিক্সের মতো উদীয়মান খাতে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: মার্কিন আইনপ্রণেতাদের ভূমিকা রাখার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরও জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবে এবং দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সমুদ্র অর্থনীতি, আইসিটি ও ফার্মাসিউটিক্যালসে আরও সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছেন।
তরুণ জনগোষ্ঠীকে আরও বেশি বৃত্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের অনুরোধের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি বলেছেন, জাপান মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশকে বৃত্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে।
এ সময় টোকিওতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ, মিশন উপপ্রধান শাহ আসিফ রহমান ও পরিচালক (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়) মো. এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।