আবাসিক হলে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের রাতভর শারীরিক নির্যাতন ও গালাগাল এবং ঘটনার সময় উপস্থিত থেকে নির্যাতনে পরস্পরকে উসকানি দেয়ার অপরাধে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইংরেজি বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব শরীফ হাসান লিমন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও গালিগালাজ এবং অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে দিয়ে মারধর করার অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান রাজা ও রাজবর্মণ বিধানকে চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফলের তারিখ হতে ছয় মাস সার্টিফিকেট স্থগিত এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া, একই বিভাগের মিনহাজ উর রহমান ও সাবেরুল বাশার নিরবকে ঘটনার সময় উপস্থিত থেকে নির্যাতনে পরস্পরকে উসকানি দেয়ার অভিযোগে ছয় মাস সার্টিফিকেট স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, একই অভিযোগে আরেক শিক্ষার্থী ফাহাদ রহমান অঝোরকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, শাস্তির বিষয়ে নিয়মানুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করতে পারবেন সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব শরীফ হাসান লিমন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ওই পাঁচ শিক্ষার্থীর বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আরও পড়ুন: খুবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ!
সে সময় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান রাজা এবং রাজবর্মণ বিধানকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। একই ডিসিপ্লিনের মিনহাজ উর রহমানকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার, সাবেরুল বাশার নিরবের এক বছরের জন্য সার্টিফিকেট স্থগিত এবং ফাহাদ রহমান অঝোরকে অভিভাবকসহ মুচলেকা দেয়ার শর্তে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান লিমন বলেন, ‘গত বছর ৩১ ডিসেম্বর অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে যে জবাব দিয়েছিল তার প্রেক্ষিতে শৃঙ্খলা বোর্ড এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
মো. শরীফ হাসান লিমন আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত একাডেমিক কাউন্সিল বরাবর সাজাপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষার্থী আপিল করেনি।’
এদিকে সাজাপ্রাপ্ত ছাত্র মশিউর রহমান রাজা বলেন, ‘আমাদের পাঁচজনকে যে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে এটা আমরা গতকাল জানতে পেরেছি। এখনতো সবাই ক্যাম্পাসে নাই, সবাই আসলে আমরা একাডেমিক কাউন্সিলে আপিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
আরেক সাজাপ্রাপ্ত ছাত্র ফাহাদ রহমান অঝোর বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কারণ আমি ঘটনার দিন উপস্থিত ছিলাম না। আর এরই মধ্যে হলের ইন্টারনাল তদন্তে আমি নিরপরাধ প্রমাণ হওয়ায় আমার হলের সিটও বাতিল করা হয়নি। আমি একাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করব এবং আমি এর ন্যায়বিচার চাই।’
আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে হলে ফিরতে চায় খুবি শিক্ষার্থীরা