করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত সরকার সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করায় সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সকল আদালতে স্বাভাবিক বিচার কাজ বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি মামলা নিষ্পত্তির জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগের তিনটি একক বেঞ্চ এবং সারা দেশে সকল জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট, মহানগর এলাকায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
এই সময়ে আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার এসব বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরের স্বাক্ষরে পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার থেকে আবারও প্রথম ডোজের টিকা দেয়া শুরু
আপিল বিভাগ বসবেন ৬ ও ৭ জুলাই
লকডাউনের মধ্যেই আপিল বিভাগের বিচারপতিরা আগামী ৬ ও ৭ জুলাই নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করে ভার্চুয়ালি আদালত চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই দুদিন ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জেল আপিল মামলা শুনানি করা হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের মামলার নথি নিজ নিজ বাসায় নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। আইনজীবীদেরও বাসায় অবস্থান করে মামলায় শুনানি করতে বলা হয়েছে। আর এ জন্য আপিল বিভাগের দুজন কর্মকর্তাকেও বাসায় বসে আদালতে যুক্ত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে চেম্বার আদালতে শুনানি সংক্রান্ত বিষয়ে আইনজীবীদের সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টার এবং সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চ বসবে
লকডাউনের কারণে স্বাভাবিক বিচার কাজ বন্ধ হলেও জরুরি বিষয় শুনানির জন্য ১ জুলাই থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চ বসবেন। এই তিনটি বেঞ্চের এখতিয়ারও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের বেঞ্চে অতি জরুরি সকল রিট মোশন, দেওয়ানী মোশন ও তৎসংক্রান্ত আবেদনপত্র; বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চে অতি জরুরী সকল ফৌজদারি মোশন ও তৎসংক্রান্ত আবেদনপত্র এবং বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চে অ্যাডমিরালটি, বিবাহবিচ্ছেদ, সাকসেশন, আদিম অধিক্ষেত্র, ব্যাংকিং আইন, কম্পানি আইনসহ অর্থসংক্রান্ত যাবতীয় আবেদনপত্র শুনানি হবে। তবে সব শুনানিই ভার্চুয়ালি হবে।
আরও পড়ুন: মার্চের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষ টিকা পাবে: সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ম্যাজিস্ট্রেট আদালত খোলা
সব আদালতে স্বাভাবিক বিচার কাজ বন্ধ থাকলেও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় সকল জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট, মহানগর এলাকায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রমেন্টস অ্যাক্টস,১৮৮১ সহ যে সকল আইনে মামলা/আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত আছে, সে সকল আইনের অধীনে মামলা/আপীল শারীরিক উপস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার ৭ দিনের মধ্যে তামাদির মেয়াদ অক্ষুন্ন গণ্যে দায়ের করা যাবে।’
আরও পড়ুন: করোনায় রেকর্ড শনাক্তের দিনে ১১৫ জনের মৃত্যু
বিজ্ঞপ্তিতে এই সময়ে বিচারক ও আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের এ সময়ে আদালত অঙ্গনে না আসার জন্য বলা হয়েছে।
শিশুকে সরাসরি আদালতে হাজির
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুকে শারীরিক উপস্থিতিতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপন করা যাবে।