সম্প্রতি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে চলন্ত লঞ্চে আগুন লেগে ৪২ যাত্রী নিহতের ঘটনায় ওই লঞ্চের দুই চালককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে নৌ আদালত।
কারাগারে পাঠানো দুই চালক হলেন, তারা হলেন- মামলার অষ্টম আসামি আবুল কালাম (ইনচার্জ চালক) ও সপ্তম আসামি মাসুম বিল্লাহ (২য় চালক)।
রবিবার নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রসিকিউটিং অফিসার অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রবিবার সকালে লঞ্চের দুই চালক নৌ-আদালতের স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নব বেগমের কাছে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন আরও জানান, ইঞ্জিন রুমের সার্বিক দায়িত্ব ইঞ্জিন চালকদের। তারা শুধু তাদের দায়িত্বে অবহেলাই করেনি, আগুনের পর তাদের ভূমিকা ছিল বেপরোয়া।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে।
অ্যাডভোকেট বিল্লাল আরও বলেন, তারা যদি নিখুঁত তত্ত্বাবধানে ইঞ্জিন রুমটি সঠিকভাবে পরিচালনা করত, তাহলে সম্ভবত এই ভয়াবহ বিপর্যয় এড়ানো যেত।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: যমজ মেয়ের পর এবার ভেসে এলো মায়ের লাশ!
আসামিদের পক্ষে জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর লঞ্চের দুই মাস্টার রিয়াজ সিকদার (মাস্টার ইনচার্জ) ও ৬ষ্ঠ আসামি খলিলুর রহমানকে (দ্বিতীয় মাস্টার) আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের কারাগারে পাঠায় একই আদালত।
গত ২৪ ডিসেম্বর লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের পর রাজধানীর মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ ভবনের ৮ম তলায় আদালত বসানো হয়।
গত ২৬ ডিসেম্বর নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান লঞ্চের চার মালিকসহ আট জনের বিরুদ্ধে নৌ আদালতে নৌ আইনে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
উল্লেখ্য, ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠি শহরের সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় লঞ্চটিতে ৮০০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল। পুলিশ এ ঘটনায় ৪৮ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছে, এছাড়া অন্তত ৮০ জন দগ্ধ এবং অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭, এখনও নিখোঁজ ৫৮