রাজধানীর বনানী থানায় চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে দায়ের করা মাদক মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ছয় সপ্তাহের জন্য এই স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। এই আদেশের ফলে এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। পরীমণির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। এর আগে গত ১ মার্চ বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মাদক মামলার কার্যক্রমের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন। রুলে এ মামলা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন জানায়।
আরও পড়ুন: পরীমণির মামলায় নাসির-অমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ১৯ এপ্রিল
গত ৫ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলাম তিনজনের অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার শুরু হওয়া অপর দুই আসামি হলেন-পরীমণির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপু ও মো. কবীর হাওলাদার।
পরে পরীমণি গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টে এ মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। পরে ১ শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১ মার্চ মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করেন। ওই একই দিন বিচারিক আদালতে এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীতে পরীমণির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। পরে তাকে গুলশান থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ৩১ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত পরীমণির অন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। এ মামলায় ৪ অক্টোবর পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ১০ অক্টোবর পরীমণি ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন নেন।
আরও পড়ুন: পরীমণির বিরুদ্ধে করা মাদক মামলার কার্যক্রম স্থগিত
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরীমণির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমণির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমণি এ মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমণি তাঁর গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।