আমেরিকা নিয়ন্ত্রিত জোট কোয়াডে বাংলাদেশের যোগদান করা উচিত হবে না উল্লেখ করে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সোমবার বলেছেন, যদি যোগ দেয় তবে সেটা বাংলাদেশ-বেইজিং সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘যথেষ্ট খারাপ’ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কোয়াড একটি চীনবিরোধী সামরিক জোট বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কোয়াড একটি ‘সংকীর্ণ উদ্দেশ্যমূলক’ ভূ-রাজনৈতিক চক্র এবং বাংলাদেশের এতে যোগদান করা উচিত নয়, কারণ এই উদ্যোগ থেকে কোনও লাভ হবে না।
২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে এই জোট গঠিত হয়।
লি জিমিং বলেন, ‘ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে যে এই ধরনের অংশীদারিত্ব অবশ্যই আমাদের প্রতিবেশীদের নিজস্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং জনগণের মঙ্গলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিকাব) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আলোচনা স্থগিত
ডিকাবের সভাপতি পান্থ রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
২৭ এপ্রিল চীনের স্টেট কাউন্সিলর এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়েই ফেঙ্গি রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সাথে দেখা করেন এবং দুপক্ষই দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা তরান্বিত করার ব্যাপারে একমত হন।
রোহিঙ্গা, তিস্তা
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে কেউ বলতে পারে না এবং বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা পুনরায় শুরু করতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক নয় বলে চীন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মিয়ানমার সরকারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি।
বিগত কয়েকবছরে মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয় নি।
রোহিঙ্গাদের মাঝে বিশ্বাসযোগ্যতা ঘাটতি দূর করতে না পারা ও উপযোগী পরিবেশের অভাবে রাখাইনে তাদের প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা দুবার ব্যর্থ হয়েছে।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর প্রত্যাবাসন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। ২০১৮ সালের ১৬ জানুায়ারি ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ সম্পর্কিত একটি চুক্তিতেও স্বাক্ষর করে ঢাকা-নেপিদো, যা রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ বলছে রোহিঙ্গারা তাদের সরকারকে বিশ্বাস করছে না এবং এজন্য বাংলাদেশ তাদের কাছে কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়েছে। মিয়ানমার কোনো প্রস্তাবনাকেই না করেনি কিন্তু কোনো প্রস্তাবনা এখনো কার্যকরও হয় নি।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই চীন থেকে ভ্যাকসিন পেতে আশাবাদী ঢাকা
রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য বাংলাদেশ একাধিক উপায়ে- দ্বিপক্ষীয়, বহুপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় এবং বিচার ব্যবস্থা মাধ্যমে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে লি বলেন, তিস্তা নদীর ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে চীন আন্তরিকভাবে বিবেচনা করবে যদি সে ব্যাপারে সম্ভাব্য কোনো প্রতিবেদন তারা পায়।
তিনি বলেন, প্রস্তাবনা পাঠানোর আগে বাংলাদেশ সরকারের এ ব্যাপারে একটি গবেষণা পরিচালনা করা উচিত।