জেলার ৯টি উপজেলার ক্রেতা-বিক্রেতারা নিয়ম মেনে বিভিন্ন গ্রামের মাঠ এবং ফাঁকা স্থানে চালু হওয়া ৯৮টি হাটে সব পণ্যই কেনাবেচা করতে পারছেন।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে হাটগুলো মনিটরিং করতে আছে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। তারা হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি মাস্ক পরার জন্য জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
যুগ যুগ ধরে বাগেরহাটে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক আর অল্প জায়গার গড়ে উঠা সাপ্তাহিক হাটগুলো বিভিন্ন উপজেলায় খেলার মাঠ, স্কুলমাঠ, কলেজমাঠ, ইউনিয়ন পরিষদের মাঠসহ পাশ্ববর্তী ফাঁকা স্থানে হাট বসার আগে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয় মাঠে।
সরেজমিনে বাগেরহাট সদর উপজেলার দরগার হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটটি স্থানান্তর করে পাশ্ববর্তী ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে। বিশাল মাঠজুড়ে ওই হাটে বিক্রেতারা অস্থায়ীভাবে তাবু আর সামিয়ানা টানিয়ে সারিবদ্ধভাবে দোকানিরা তাদের পণ্য নিয়ে বসেছেন। নানা বয়সের মানুষ আসছেন হাটে। তবে, ক্রেতাদেরও খুব একটা ভিড় নেই। যারা আসছেন তারা এক পথে হাটে প্রবেশ করছেন দ্রæত সময়ের মধ্যে পণ্য কিনে এবং ভিন্ন পথ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
গত সোমবার জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগার হাটে গিয়ে দেখা যায়, পাশ্ববর্তী ফুটবল খেলার মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এ হাটটি। ওই মাঠে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দোকানিরা তাদের পণ্য নিয়ে বসে আছেন। ক্রেতারাও দূরত্ব বজায় রেখে পণ্য ক্রয় করছেন। হাটে কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। ক্রেতারাও তাদের চাহিদা মতো পণ্য ক্রয় করতে পেরে খুশি। এই ভাবেই জেলার ৯৮টি হাট বিভিন্ন মাঠ এবং ফাঁকা স্থানে বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হাটের দোকানিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দূরত্ব বজায় রেখে ক্রেতারাও তাদের চাহিদা মতো পণ্য কিনতে পারছেন। চার থেকে পাঁচ ফুট দূরত্বে প্রতিটি দোকান সারিবদ্ধ ভাবে পাতানো হয়েছে। এতে এখন দোকানি ও ক্রেতা উভয়ই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।
ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আকতারুজ্জামান বাচ্চু, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন ও ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাস বলেন, তাদের এলাকার হাট এবং বাজার ব্যবস্থাপনাকে ভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে। মানুষের ভোগ্য পণ্যের চাহিদার কথা বিবেচনা করে মাঠে এবং ফাঁকা স্থানে হাট বসানো হয়েছে। মানুষ হাটে এসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চাহিদা মাফিক পণ্য ক্রয় করতে পারছেন। হাটগুলো শুরুর আগে জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করা হয়।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, জেলায় ১৩৪টি হাটের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার জন্য ৯৮টি হাট মাঠ এবং ফাঁকা স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত এসব হাট নানাভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে।
এছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাগেরহাটের মানুষ রক্ষা করতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাসহ নানা ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।