চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো ধানের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। ধান গাছে শীষ ফুটতে শুরু করেছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে বোরো ধান গাছের সবুজ পাতা ও কাঁচা শীষ। আর সেই সাথে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ দেখে কৃষকের চোখে মুখে এখন আনন্দ। বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে এবার বোরোর বাম্পার ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের মাঠে ঘুরে দেখা যায়, বোরো ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের খেতে উঁকি দিচ্ছে শীষ। কৃষকরা ব্যস্ত ধান ক্ষেতের পরিচর্যায়। কেউ কেউ ব্যস্ত জমিতে সেচ, সার, কীটনাশক প্রয়োগে, আবার কেউ কেউ ব্যস্ত আগাছা পরিষ্কারে।
কৃষকরা জানায়, এবার আবাদ মৌসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে, বীজ, সার, সেচের কোন সমস্যা নেই। জমিতে এখন পর্যন্ত রোগ বালাই বা পোকা মাকড়ের তেমন বড় ধরনের সমস্যা হয়নি। দু’য়েক বার কীটনাশক প্রয়োগের ফলে তা সেরে গেছে। বোরো ধানের পরিস্থিতি ভালো। বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা কৃষকদের।
সদর উপজেলার আতাহার এলাকার বোরো চাষি আকবর আলী বলেন, এবার আমার ১০ বিঘা জমিতে বোরো আছে। এখন শীষ ফুটছে। অন্য বছরের চেয়ে এবার পোকামাকড়, রোগ বালাই তেমনভাবে নেই। এবার সবকিছু ভালোই আছে। এমন থাকলে ফলন ভালো হবে।
পড়ুন: সুনামগঞ্জে ঝুঁকিতে বোরো ফসল, আতঙ্কে কৃষক
অনেক জমিতে শীষ আসছে আবার অনেক জমিতে শীষ পুরোপুরি ফুটে গেছে।
একই এলাকার আরেক চাষি জাহাঙ্গীর জানান, এবার তিনি ৬ বিঘায় বোরো ধান চাষ করেছেন। এখন ধানের অবস্থা ভালো। শীষ আসতে শুরু করেছে। সার-সেচের সমস্যা নেই। বৈশাখ মাসের মাঝামঝিতে ধান কাটা শুরু হবে।
তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যদি বালা মসিবত না দেয় তাহলে এবার বাস্পার ফলন হবে। ২৫-২৬ মন বিঘায় ফলন পাওয়া যাবে। বর্তমানে ধানের বাজার দর ভালো আছে। ১৩’শ-১৪’শ টাকা মন দও চলছে। এমন বাজার দর থাকলে কৃষকরা লাভবান হবে।’
নাচোল এলাকার চাষি সামাদ আলী জানান, মাঠের অবস্থা ভালো। আশা করি ভালো ফলন পাব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৯ হাজার ৪০০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৫১ জাহার ২৪০ হেক্টর।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের লোক কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে, শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার বোরোর ভালো ফলন হবে আশা করা হচ্ছে।