প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের কাজ করতে বলেছেন। যাতে মিথ্যার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভ্রান্ত না হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলতে চাই আপনাদের উচিত আমাদের দূতদের প্রচারণা সম্পর্কে অবহিত করা। তাহলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে না। বিশেষ করে আমাদের আন্তর্জাতিক সংস্থাগুরোতে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।’
ইতালির রাজধানী রোমে তার বাসভবনে ইউরোপে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
ইউরোপীয় দেশগুলোতে অবস্থানরত ১৫ জন বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
তিনি বলেন, কিছু লোক দেশে অপরাধ করে বিদেশে আশ্রয় নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কিছু মানুষ আছে যারা কখনোই দেশকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, কিছু মানুষ আছে, যারা অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দোষী সাব্যস্ত বা অপরাধী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বিদেশে অবস্থান করে ক্রমাগত দেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। ‘সবাইকে তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার করেছে, তাই তারা দেশের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারে। “তাদের কত আছে! তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।’
বিদেশিরা প্রায়ই ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় তা নিয়ে দু-একটি দেশ ব্যস্ত থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া, যারা খুনিদের আশ্রয় দেয় এবং অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত তাদের কাছ থেকে আমাদের মানবাধিকারের কথা শুনতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা অগ্নিসংযোগের অভিযোগে অভিযুক্তদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত, কিন্তু নিহত, আত্মীয়-স্বজন বা যারা দগ্ধ হয়েছেন তাদের কোনো পরোয়া করেন না।
র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে কাজ করেছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে তারা তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলে।’
তিনি বলেন, তারা একদিকে মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য আওয়াজ তুলছেন, অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে কথা বলছেন। বিশ্বব্যাপী দ্বৈতনীতি চালু রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়ে তার সরকারের অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানবাধিকার রক্ষা করে, আর যারা মানবাধিকারের কথা বলে; তারাই মানুষ হত্যা করে।
দেশের নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা বলেন, যেসব খুনি তার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের গুলি করে হত্যা করেছে, তারা এখনও সে দেশে পলাতক রয়েছে।
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী এখন রোমে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নেপালকে পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী