জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর তিন দফা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার ফলে ধান, পাট, ভুট্টা, কাউন, চিনা, তিল ও মরিচসহ ১৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪০ কোটি টাকা। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষি বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে ২৭ হাজার ৭৬১ কৃষকের মাঝে পর্যায়ক্রমে সবজির বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় খরিপ-২ এর আওতায় মাঠে ফসল আবাদ হয়েছে ৪৯০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে মূলা ১২০ হেক্টর, লাউ ৭০ হেক্টর, পাটশাক ১৬০ হেক্টর ও লালশাক ১৪০ হেক্টর।
এছাড়া, শীতের আগেই আগাম বেগুনসহ অন্যান্য শাকসবজি লাগাচ্ছেন অনেক চাষি। অনেকে আবার শীতকালীন বাঁধাকপি ও ফুলকপির চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে এবং অধিক লাভের আশায় কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন তারা।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠে চলছে আগাম রবিশষ্য ফসলের সবুজ সমারোহ। সবজির জন্য সুপরিচিত কিছু এলাকার মাঠজুড়ে রয়েছে বেগুন, লাউ ও বিভিন্ন শাকের কোমল লতাপাতা বেড়ে উঠা। কোথাও কোথাও লাল-সবুজের সমারোহে ভরে উঠেছে মাঠ।
রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের বেগুন চাষি খলিল, আশরাফুল ও মইনুদ্দিন জানান, বাজারের চাহিদা বিবেচনা করে তারা প্রায় দেড় একর জায়গাজুড়ে বেগুন চাষ করছেন।
তারা জানান, প্রতি বিঘায় বেগুন রোপন করতে খরচ লাগে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। আর সেখান থেকে খেত রোগমুক্ত ও আবহাওয়া অনুকূলসহ ভালো দাম থাকলে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বেগুন পাওয়া যায়। যাবতীয় খরচ মিটিয়ে বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়। আর যেসব চাষি অন্যের জমি লিজ নিয়ে বেগুনসহ অন্যান্য সবজি চাষাবাদ করেছেন তারা যাবতীয় খরচ মিটিয়ে বিঘা প্রতি ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান বলেন, ‘বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ২৭ হাজার ৭৬১ কৃষকের মাঝে সবজি বীজ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’