সোমবার সিলেটে ইউএনবির সাথে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান। সাক্ষাৎকার নেন ইউএনবির জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ মহসিন।
মিলার বলেন, ‘আমার এখানে আসার আরেকটি কারণ হলো সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করা এবং কীভাবে আমরা এক সাথে কাজ করতে ও আমেরিকান কোম্পানিগুলোকে সিলেটে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে পারি তা দেখা এবং সিলেটের কোম্পানিগুলো কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করতে পারে তা পরখ করা।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমেরিকান কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ‘পুরোদস্তুর সুপারস্টার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, তারা শিক্ষাগতভাবে সফল এবং অবশ্যই সামাজিকভাবেও সফল।
মিলার মূলত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার যৌথ সামরিক মহড়া পর্যবেক্ষণ করতে তৃতীয়বারের মতো সিলেট সফরে আসেন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলার ভিন্ন উপায় এবং স্পেশাল ফোর্স ইউনিট কীভাবে এ হুমকি সমাধান করে সে বিষয়ে নজর রয়েছে তার।
তার সফরসূচিতে আরও ছিল ইউএসএআইডির অর্থায়নে চলা কিছু কর্মসূচি পরিদর্শন এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাওয়া ও সম্ভাব্য সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিনিময় নিয়ে কথা বলা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময় সংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা করা মিলার বলেন, বাংলাদেশ ঘুরে দেখার জন্য যতটা সম্ভব তিনি চেষ্টা করছেন। যাতে কোন জায়গাগুলোতে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ একত্রিত হতে পারে তা তিনি সত্যিকারভাবে উপলদ্ধি করতে পারেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত সোমবার বিকালে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান শামিম আহমেদ ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদ উল্লাহ তালুকদারের সাথে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সেই সাথে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আমেরিকান কর্নারে একটি অনির্ধারিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
‘বাংলাদেশে আমাদের পাঁচটি আমেরিকান সেন্টার আছে। এখানে আমরা আমেরিকান নীতি, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলতে পারি এবং সেই সাথে শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষা/শিক্ষকতা নেয়ার বিষয়ে উৎসাহিত করি।’
মিলার জানান, তাদের অনেকগুলো শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি রয়েছে।
এসব কর্মসূচির প্রাক্তন শিক্ষার্থী যারা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেছেন এবং বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন মিলার। ‘তারা যুক্তরাষ্ট্রে যা শিখেছেন তা কীভাবে নিয়েছেন এবং এ দেশে তাদের ভবিষ্যত গড়েছেন তা দেখতে আমি উৎসুক।’
হযরত শাহজালালের মাজার পরিদর্শন করতে গিয়ে আনন্দিত হয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। ‘আমি শাহজালালের মাজার, যা একেবারে মনোরম তা পরিদর্শনের এবং কেমন মমতায় সংরক্ষণ করা হয়েছে সেটি দেখার চমৎকার সুযোগ পেয়েছি। এ মাজার এত শত বছর ধরে টিকে আছে। মাজার শুরুর সময়ের আসল বাবা-মায়ের প্রজন্ম থেকে আসা কবুতরগুলো দেখেছি এবং এভাবেই ইতিহাস সংরক্ষিত হয়। এটা খুবই আকর্ষণীয়।’
বিদেশে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে মিলার বলেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দেখা যায় যে তারা উচ্চ শিক্ষার সুযোগকে সত্যিই উপলদ্ধি করতে পারেন, একে গুরুত্বের সাথে নেন, অনেক আত্ম-সংকল্প ও পরিপক্বতা প্রদর্শন করেন এবং নিজেদের উন্নত করতে এ সুযোগকে কাজে লাগান। পরে অনেকে বাংলাদেশে ফিরে এসে অনেক সফল হন।
আবার সিলেটে আসার পরিকল্পনা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি আমার পরিবারের সাথে ফিরে আসতে এবং বৃক্ষরোপনে কিছু সময় কাটাতে চাই।’
ম্যানগ্রোভ বনে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের শহরের বাইরে যেতে এবং ঘোরাঘুরি করতে চাই। আমি শহরেও ঘোরাঘুরি করতে চাই। আজ আমার সিলেটের রাস্তায় হাঁটার এবং মানুষের সাথে কথা বলার চমৎকার সুযোগ হয়েছিল।’