রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করলে তার পরিণতি ধ্বংসাত্মক হবে। আর যুদ্ধ ইউরোপে ছড়িয়ে পড়লে তা আরও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। এই যুদ্ধ বৃহত্তর পরিসরে ছড়াবে কিনা তা আংশিকভাবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার ওপর, আংশিকভাবে পশ্চিমের সামরিক প্রতিক্রিয়ার ওপর এবং আংশিকভাবে ভাগ্যের ওপর নির্ভর করবে।
মার্কিন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা কয়েকদিন ধরে বলে আসছেন, যে রুশ আক্রমণ আসন্ন বলে মনে হচ্ছে। যদিও মঙ্গলবার প্রকাশ্যে পুতিনের সরকার পশ্চিমা বিশ্বকে নিরাপত্তা আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে। তারা আরও বলেছে, ইউক্রেন সীমান্তে মহড়ার পর সেনারা তাদের নিয়মিত ঘাঁটিতে ফিরে আসবে।
এই যুদ্ধ শুধুমাত্র ইউক্রেনের জন্য নয় বরং ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রতিষ্ঠিত ইউরোপীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং তারপরে জার্মানির পুনর্মিলন, পূর্ব ইউরোপে কমিউনিজমের পতন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং ন্যাটোর সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই করবেন না। কিন্তু পুতিন যদি ইউক্রেনের সীমানা ছাড়িয়ে ন্যাটো অঞ্চলে আক্রমণ চালায়, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ ওয়াশিংটন উত্তর আটলান্টিক চুক্তি দ্বারা তার মিত্রদের রক্ষা করতে বাধ্য। এ অঞ্চলের বেশ কিছু মার্কিন মিত্র দেশ রুশ আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার আশঙ্কা করছে।
মঙ্গলবার বাইডেন এ বিষয়ে বলেছেন, ‘কোনো ভুল নেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পূর্ণ শক্তি দিয়ে ন্যাটো অঞ্চলের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করবে।’
আরও পড়ুন: নাগরিকদের ইউক্রেন ত্যাগের আহ্বান ভারতের
তিনি বলেন, ‘ন্যাটোভুক্ত একটি দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ মানে আমাদের সকলের বিরুদ্ধে আক্রমণ।’
বাইডেন আরও বলেন, ইউক্রেনের কোনো আমেরিকানকে যদি রাশিয়া লক্ষ্য করে, তাহলে আমরা এর জবাব দেব।
পুতিন ইউক্রেনের বাইরে আগ্রাসন প্রসারিত করতে পারে এমন ভুল বোঝাবুঝির ফলেও একটি খণ্ড যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। আর একবার লড়াই শুরু হলে তা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে না।
এমনকি যদি পুতিন আগামী দিনে পিছিয়ে যায় এবং নিজ দেশের নিরাপত্তার জন্য আলোচনার পথ অনুসরণ করেও,তবুও ইউক্রেনের সীমান্তে তার বিশাল বাহিনী গড়ে তোলার ফলে তৈরি উত্তেজনা ইউরোপের অন্য কোথাও স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন- ন্যাটোর পূর্ব ফ্রন্টে মার্কিন মিত্ররা বিশেষ করে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া এবং লিথুয়ানিয়ার বাল্টিক রাজ্যগুলোতে (যেগুলো একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল) বৃহত্তর ও স্থায়ী মার্কিন সামরিক উপস্থিতির জন্য চাপ দিতে পারে৷
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে হামলা করলে চড়া মূল্য দিতে হবে, পুতিনকে বাইডেনের হুঁশিয়ারি
রুশ হামলার আশঙ্কা, ইউক্রেন থেকে দূতাবাস সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র