মালয়েশিয়ান সরকার বতর্মানে তাদের জিম্মায় থাকা এসব ব্যাক্তিকে আগামী সপ্তাহে মিয়ানমার নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে রাজি হয়েছে।
ফর্টিফাই রাইটসের নির্বাহী পরিচালক অ্যামি স্মিথ বলেন, ‘সময় এখন মিয়ানমার থেকে পালানো লোকজনকে সুরক্ষা প্রদান এবং জাতিসংঘকে কাজ করতে দেয়ার, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দীর্ঘ নজির থাকা সামরিক জান্তার হাতে তাদের তুলে দেয়ার নয়।’
আরও পড়ুন: ভাসানচর: ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছেন রোহিঙ্গারা
রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় ইইউ
মালয়েশিয়ার এ পরিকল্পনা রোহিঙ্গাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবে এবং মিয়ানমারে আপত্তিজনক সামরিক অভ্যুত্থানকে অযৌক্তিক বৈধতা দেবে বলে মন্তব্য করেন অ্যামি স্মিথ।
মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কুয়ালালামপুরের মিয়ানমার দূতাবাসের দেয়া ১১ ফেব্রুয়ারির একটি চিঠির কপি হাতে পেয়েছে ফর্টিফাই রাইটস এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। চিঠিটি কাগজ না থাকা মিয়ানমারের ১২০০ নাগরিকের প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট।
চিঠিতে দূতাবাস পারেক রাজ্যের লোমোট নৌ ঘাঁটিতে নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজের ২১ ফেব্রুয়ারি নোঙর এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক খাইরুল ডিজাইমি দাউদ ১১ ফেব্রুয়ারির এক সংবাদে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘হ্যাঁ আমরা একমত হয়েছি। তারা সবাই অভিবাসন কেন্দ্রের।’
দাউদ ১৫ ফেব্রুয়ারি স্পষ্ট করেন যে ফেরত যাওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের মাঝে ইউএনএইচসিআরের কার্ডধারী বা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা থাকবেন না।
তিনি যুক্তি দেখিয়ে বলেন যে যারা ফিরে যাবেন তাদের সঠিক কাগজ না থাকা বা বেশি সময় অবস্থান বা কাগজের অপব্যবহারের কারণে আটক করা হয়েছিল।
এ দাবি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। কারণ মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ ২০১৯ থেকে ইউএনএইচসিআরকে অভিবাসীদের আটক রাখার কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
আরওপড়ুন: রোহিঙ্গারা ভাসানচরে খুশি, তবুও তারা মিয়ানমারে ফিরতে চায়
রোহিঙ্গা সঙ্কটের একমাত্র সমাধান প্রত্যাবাসন: তুর্কি রাষ্ট্রদূত
মালয়েশিয়ায় অভিবাসীদের আটক রাখার ১২টি কেন্দ্রে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মিয়ানমারের অভিবাসী ও শরণার্থী রয়েছেন। মালয়েশিয়ায় যথেষ্ট বৈধ কাগজ না থাকা শিশু ও শরণার্থীসহ বিদেশিদের গ্রেপ্তার করে আটক কেন্দ্রগুলোতে রাখা হয়।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত দেশটির কর্তৃপক্ষ আটক কেন্দ্রগুলোতে ৭৫০ জনের বেশি শিশুকে আটকে রেখেছে। তাদের মধ্যে ৩২০ জনের বেশি মিয়ানমারের যাদের অভিভাবক ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় এক লাখ ৭৮ হাজারের বেশি শরণার্থী ইউএনএইচসিআরে নাম নিবন্ধন করেছে। তাদের মধ্যে ৮৬ শতাংশের অধিক মিয়ানমারের। এদের মধ্যে আছে এক লাখের অধিক রোহিঙ্গা, ২২ হাজার চিন ও ২৯ হাজার অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ।