সাত দশকেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালন করে বৃহস্পতিবার ৯৬ বছর বয়সে স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা যান।
তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ধারাবাহিক ঘটনাক্রম হচ্ছে:
২১ এপ্রিল, ১৯২৬: লন্ডনের মেফেয়ারে প্রিন্সেস এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা মেরি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সে সময়ের ভবিষ্যতের রাজা ষষ্ঠ জর্জ ও রানি এলিজাবেথের প্রথম সন্তান তিনি। পরে তাকে রানির মা বলা হয়।
১০ ডিসেম্বর, ১৯৩৬: এলিজাবেথ তার চাচা রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড সিংহাসন ত্যাগ করার পর এবং তার বাবা রাজা হওয়ার পর সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হন।
১৩ অক্টোবর, ১৯৪০: যেসব শিশু বিমান হামলার (ব্লিটজ) সময় তাদের মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাদের উদ্দেশ্যে এলিজাবেথ ১৪ বছর বয়সে বিবিসি চিলড্রেনস আওয়ার অনুষ্ঠানে প্রথম বক্তব্য দেন।
১৯৪৫: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনের হয়ে কাজ করার জন্য এলিজাবেথকে অক্সিলারি টেরিটোরিয়াল সার্ভিসে একজন সাবল্টার্ন (জুনিয়র অফিসার) করা হয়।
২০ নভেম্বর, ১৯৪৭: এলিজাবেথ ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে গ্রিস ও ডেনমার্কের প্রিন্স ফিলিপ মাউন্টব্যাটেনকে বিয়ে করেন।
১৪ নভেম্বর, ১৯৪৮: প্রিন্স চার্লস জন্মগ্রহণ করেন। ফলে তিনি সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হন।
আরও পড়ুন: রানির মৃত্যু: অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও দাফন
১৫ আগস্ট, ১৯৫০: এলিজাবেথের দ্বিতীয় সন্তান ও একমাত্র কন্যা অ্যান জন্মগ্রহণ করেন।
৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২: এলিজাবেথ তার বাবা জর্জ ষষ্ঠের মৃত্যুর পর রানি হন।
২ জুন, ১৯৫৩: ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে একটি জমকালো রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে তাকে মুকুট পরানো হয়। তিনি কমনওয়েলথ সফরে বারমুডা, ফিজি, টোঙ্গা, অস্ট্রেলিয়া ও জিব্রাল্টারসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে বের হন।
১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬০: এলিজাবেথের তৃতীয় সন্তান প্রিন্স অ্যান্ড্রু জন্মগ্রহণ করেন।
১০ মার্চ, ১৯৬৪: এলিজাবেথের চতুর্থ সন্তান প্রিন্স এডওয়ার্ড জন্মগ্রহণ করেন।
মে, ১৯৬৫: এলিজাবেথ পশ্চিম জার্মানিতে এক ঐতিহাসিক সফর করেন। যা ছিল ৫২ বছরের মধ্যে কোনো ব্রিটিশ সম্রাটের প্রথম জার্মান সফর।
১৯৭৭: এলিজাবেথ সিংহাসনে বসার রজত জয়ন্তী উদযাপন করেন।
১৯৯২: এ বছরটি ছিল এলিজাবেথের ভাষায় ‘অনুস হরিবিলিস’ বা ভয়ংকর বছর। তার চার সন্তানের মধ্যে তিন সন্তানের বিয়ে ভেঙ্গে যায়। সে বছর আগুনে উইন্ডসর ক্যাসেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মন্দার মধ্যে মেরামতের খরচ জোগাতে রানিকে আয়কর দিতে হয়।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ (১৯২৬-২০২২) : ইতিহাসের দ্বিতীয় দীর্ঘমেয়াদী রাজত্বকারী সম্রাজ্ঞীর বিদায়
৩১ আগস্ট, ১৯৯৭: প্রিন্সেস ডায়ানা প্যারিসে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। তার দুঃখ প্রকাশের জন্য জনসাধারণের চাপের মুখে এলিজাবেথ ডায়ানার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি অভূতপূর্ব টেলিভিশন সম্প্রচার করেন।
২০০২: এলিজাবেথ তার সিংহাসনে আরোহণের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেন। এ বছরে এলিজাবেথের মা ও তার বোন মার্গারেটের মৃত্যু হয়।
২০ ডিসেম্বর, ২০০৭: ভিক্টোরিয়াকে ছাড়িয়ে এলিজাবেথ সবচেয়ে দীর্ঘজীবী ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞী হন।
মে, ২০১১: এলিজাবেথ আয়ারল্যান্ডে এক ঐতিহাসিক সফর করেন। যা আইরিশ স্বাধীনতার পর ব্রিটিশ সম্রাটের প্রথম সফর।
২০১২: এলিজাবেথ সিংহাসনে তার হীরক জয়ন্তী পূর্ণ করেন।
৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫: এলিজাবেথ রানি ভিক্টোরিয়াকে ছাড়িয়ে ব্রিটিশ ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী সম্রাট হন।
১১ জুন, ২০১৬: ব্রিটেন এলিজাবেথের আনুষ্ঠানিক ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে তিন দিনের জাতীয় উৎসব উদযাপন করে।
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭: প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে এলিজাবেথ সিংহাসনে ৬৫ বছর পূর্ণ করে নীল জয়ন্তী উদযাপন করেন।
মার্চ, ২০২০: করোনাভাইরাস মহামারির শুরুতে এলিজাবেথ ও ফিলিপ লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেস থেকে উইন্ডসর ক্যাসেলে চলে যান।
৯ এপ্রিল, ২০২১: প্রিন্স ফিলিপ ৯৯ বছর বয়সে মারা গেলে এলিজাবেথের ৭৩ বছরের বিবাহিত জীবনের অবসান হয়।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে দেখতে যাচ্ছেন স্বজনরা
২০ অক্টোবর, ২০২১: এলিজাবেথ লন্ডনের একটি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে একটি রাত কাটান। ডাক্তারদের নির্দেশে তিনি পরবর্তী মাসগুলোতে তিনি শুধুমাত্র তুলনামূলক হালকা দায়িত্ব পালন করেন।
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২: এলিজাবেথ ৭০ বছরের সার্বভৌম সিংহাসন জীবনের মধ্য দিয়ে প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে প্লাটিনাম জুবিলি পালন করেন।
জুন, ২০২২: প্লাটিনাম জুবিলি উদযাপনে চারদিনের সরকারি ছুটির সময় এলিজাবেথ সীমিত পরিসরে জনসম্মুখে এসেছিলেন।
৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২: বরিস জনসন ও লিজ ট্রাসে এলিজাবেথের সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রসঙ্গে স্কটল্যান্ডে রানির গ্রীষ্মকালীন বাসভবন বালমোরাল প্রাসাদে দেখা করেন। ঐতিহ্যগতভাবে লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসে এ ধরনের অনুষ্ঠানগুলো অনুষ্ঠিত হলেও তার রানির চলাফেরার সমস্যার জন্য প্রথমবারের মতো এ বৈঠক বালমোরালে সম্পন্ন করা হয়।
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২: এলিজাবেথ স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে ৯৬ বছর বয়সে মারা যান। তার বড় ছেলে তৃতীয় চার্লস রাজা হন।