জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মৃত্যুর পর তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে।
আবে হত্যাকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় নারা শহরের পুলিশ কর্মকর্তা তোমোকি ওনিযুকা জানান, আবের হত্যাকাণ্ড তার ২৭ বছরের চাকরিজীবনে ‘সবচেয়ে বড় অনুশোচনা’।
তিনি বলেন, ‘আমি অস্বীকার করতে পারি না যে, আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল। সমস্যাটি ব্যবস্থাপনা, জরুরি পরিষেবা প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত নাকি কোনো ব্যক্তি বিশেষের ব্যর্থতা; সেটি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। সর্বোপরি, সেখানে একটি সমস্যা ছিল এবং আমরা প্রতিটি জায়গা থেকে তা মূল্যায়ন করব।’
গত শুক্রবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন শিনজো আবে। এ ঘটনায় তেতসুয়া ইয়ামাগামি নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরপর হত্যাকারীর বাসায় অভিযান চালিয়ে হত্যায় ব্যবহৃত হাতে তৈরি বন্দুকের মতো আরও কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: শিনজো আবেকে গুলি করে হত্যা, বিশ্বনেতাদের নিন্দা
জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক জানান, তিনি একটি বিশেষ কারণে আবের ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন।
গুলি চালানোর ভিডিওতে দেখা গেছে, শিনজো আবে যে জায়গায় অবস্থান করছিলেন ইয়ামাগামি তার পেছনে এসে পৌঁছেছিলেন।
এ বিষয়ে রাজধানী টোকিওর পুলিশের একজন সাবেক কর্মকর্তা ফুমিকাজু হিগুচি বলেন, ফুটেজগুলো দেখে বোঝা যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য সেখানে থাকা নিরাপত্তা অপর্যাপ্ত ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি তদন্ত করা প্রয়োজন যে, কিভাবে ইয়ামাগামি এত সহজে সেখানে গেল এবং আবের পেছনে পৌছল।’
নিহন ইউনিভার্সিটির ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক মিতসুরু ফুকুদা বলেন, ‘মনে হচ্ছে, পেছনে কি হচ্ছে সেটার চেয়ে পুলিশ সামনের দিকে বেশি নজর দিয়েছিল এবং সন্দেহবাজন ব্যক্তিকে সামনে আসতে কেউ বাঁধা দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, স্পষ্টভাবে সেখানে (নিরাপত্তা ব্যবস্থায়) ত্রুটি ছিল।
ওই অনুষ্ঠানের ভিডিওতে দেখা যায়, শিনজো আবের থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরত্বে ছিলেন ইয়ামাগামি।
জাপানে এ ধরনের রাজনৈতিক হত্যার ইতিহাস নেই বললেই চলে। দেশটিতে বন্দুক আইন বেশ কড়া। এছাড়া বন্দুকসংশ্লিষ্ট হামলায় নিহতের ঘটনাও বেশ কম। এসব কারণে শিনজো আবের হত্যাকাণ্ড দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে নতুন করে ভাবাচ্ছে।