বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, দেশের জনগণের প্রতি আস্থা না থাকায় সরকার ক্ষমতা হারানোর দুঃস্বপ্ন দেখছে।
তিনি বলেন, 'আমরা ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে শান্তিপূর্ণভাবে জনসভা করতে চাই। কিন্তু ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তারা (আ.লীগ) ঘুম হারিয়েছে। তারা নিজেরাই বলছে যে তাদের সিংহাসন উল্টে দেয়া হবে।’
শনিবার এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এর আগেও কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই নয়াপল্টনে বিএনপি অনেক সমাবেশ করেছে, এমনকি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতেও।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা (আ.লীগ) জানেন আপনারা অনেক অপকর্ম করেছেন। মানুষের প্রতি আপনাদের আস্থা নেই।তাই আপনারা ভীত এবং দুঃস্বপ্ন দেখছেন যে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান (ক্ষমতায়) আসছেন।’
দলের বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির রাজশাহী মহানগর শাখা রাজশাহী মাদরাসা মাঠে সমাবেশের আয়োজন করে।
র্যালিতে বিভাগের আট জেলা থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
নাটোর, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন।
র্যালিকে কেন্দ্র করে নগরী ও এর আশপাশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং প্রবেশপথে চেকপোস্ট স্থাপন করেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজশাহীর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বুধবার থেকে বিভিন্ন বিভাগের আওতাধীন জেলাগুলো থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা ট্রেন, ট্রাক, নৌকাসহ মানববাহী গাড়ি, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার, মোটরবাইক, মাইক্রোবাসে করে নগরীতে আসেন।
বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এছাড়া শুক্রবার বিকালে রাজশাহী অটোরিকশা মালিক সমিতিও অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করে।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, তাদের সমাবেশে জনতার ঢল বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এই হরতাল।
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল এবং ফরিদপুর, সিলেট ও কুমিল্লায় আটটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ায় রাজশাহীতে এটি ছিল বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির নবম সমাবেশ।
সিলেট, ফরিদপুর, বরিশাল, রংপুর ও খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের হরতাল কার্যকর করা হয়েছিল, তবে দলের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক বাধা অতিক্রম করে সমাবেশে অংশ নেন।
চলমান আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দেয় বিএনপি। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় শেষ জনসভা করে বিভাগীয় কর্মসূচি শেষ করবে দলটি।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পূর্বে পুলিশের অভিযানে পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।