এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে দেয়া বক্তব্যে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) উভয়কেই পদত্যাগে বাধ্য করতে রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে ‘বৃহত্তর গণ ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিৎ: ফখরুল
‘২০০৭ সালের এই দিনে একটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মধ্যে দিয়ে সেনা–সমর্থিত একটি অবৈধ ও বেআইনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়েছিল। তারা মিথ্যা মামলায় আমাদের নেত্রী খলেদা জিয়াসহ অসংখ্য রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের গ্রেপ্তারের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল,’ বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পথ ধরে আজকে আওয়ামী লীগ একইভাবে বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দলটি দেশে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনার টিকা নিয়েও সরকার দুর্নীতি ছাড়তে পারেনি: মির্জা ফখরুল
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন গণতন্ত্রকে ‘হত্যা’ করায় বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘৃণিত প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠেছে।
আরও পড়ুন: একদলীয় শাসনই সরকারের টিকে থাকার একমাত্র ভরসা: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন আমরা বারবার এ নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছি। শুধু রাজনৈতিক নেতারাই নন, দেশের যারা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী আছেন, দেশের যে এনজিও আছে এমনকি বিদেশের সংস্থাগুলোও বলছে- এই নির্বাচন কমিশনকে না সরালে বাংলাদেশে কখনোই সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে না।’
বিএনপি নেতার অভিযোগ, ইসি অযোগ্যতার কারণে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন: মৌলবাদদের পেছনে আওয়ামী লীগের হাত আছে: ফখরুল
তার দাবি, জাতীয় নির্বাচন গেছে, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা একইভাবে ভোট লুট করছে। আমাদের দল থেকে যারা গাজীপুরের শ্রীপুরের নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তাদের গতকাল (রবিবার) নির্যাতন করা হয়েছে। তবে, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কিছু করেনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভোট চুরির পর সিইসি কেএম নুরুল হুদা বলে যাচ্ছেন ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। ভোট এতোটাই সুষ্ঠু হয় যে, কোনো কোনো কেন্দ্রে শতকরা ১০০ ভাগের বেশিও ভোট পড়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘সব মিলে বৃহত্তর ঐক্য গঠন করি যাতে শুধু নির্বাচন কমিশন নয় সেই সাথে যারা মানুষ হত্যা করেছে এবং ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে তাদের বিদায় জানাই। আমাদের অধিকার, আমাদের ভোটাধিকার এবং বেঁচে থাকার অধিকার রক্ষায় সকল রাজনৈতিক দলকে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের জন্য একত্রীত হওয়ার আহ্বান জানাই। ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকার সরানোর আন্দোলন করি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদশ ‘হাইব্রিড রেজিমের’ দেশে পরিণত হয়েছে: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের যদি ন্যূনতম লজ্জা থাকে, তাহলে তাদের এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত।’
বিএনপি নেতা সরকারের প্রতি বলেন, এখনও সময় আছে আপনারা পদত্যাগ করুন। নাহলে এদেশের মানুষ জাগ্রত হয়ে আপনাদের বাধ্য করবে।
ফখরুলের অভিযোগ, ক্ষমতাসীনরা জনগণের সব অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে এবং সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে আলাদাভাবে ১৯৭৫ সালের একদলীয় শাসন ফিরিয়ে এনেছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ‘দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের’ অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা দেশকে লুটের দেশে পরিণত করেছে।’